পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার প্রশস্ত উত্তর হচ্চে এই যে, পূৰ্ব্ববঙ্গে যে হিন্দুমতে কায়স্থে বৈদ্যে বিবাহ প্রচলিত আছে সেই মতে। অপূৰ্ব্ববঙ্গে এ বিবাহের প্রচলন নেই কিন্তু পূৰ্ব্ববঙ্গের বিবাহকে এ অঞ্চলের লোক অবজ্ঞা করলেও অহৈতুক বলেন না, অতএব এ রকম বিবাহ একেবারে মূলতই অহিন্দু, যেমন অহিন্দু সগোত্রবিবাহ, একথা ঠিক নয়। যাই হোক এটা হোলো ফ্যাক্ট নিয়ে কথা এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাইনে। কিন্তু এক জায়গায় তুমি প্রিন্সিপল অর্থাৎ শ্রেয়ঃ পথের দোহাই দিয়েচ, সেখানে চুপ করে থাকা অন্যায়। শ্ৰেয়ঃ কথাটা মত্ত বড়ো কথা, উপনিষদ বলেন, শ্রেয়শ্চ প্রেয়শ্চ মনুষ্যমেতত্তেী সম্পরীত্য বিবিনক্তি ধীরাঃ । তুমি বলেচ সমাজবিধি শ্রেয়ের বিধি। পত্রাংশ উদ্ধৃত করি – বিবাহ ব্যক্তিগত প্রবৃত্তি বা অনুরাগের জিনিষ নয়, সেজন্যে তাকে সংযত করতে সমাজ বিধিনিয়মাদি করেচেন, কাজেই সমাজানুমোদিত একটা প্রচলিত পথে চলাই শ্রেয়ঃ । আহার সম্বন্ধেও বোধ হয় সে কথা খাটে, বৈজ্ঞানিক বিধিসঙ্গত স্বাস্থ্যকরতা বা স্বাভাবিক রসনাতৃপ্তির অনুগত স্বাদুতাকে সমাজ আহার সম্বন্ধে শ্রেয়ের পন্থা বলে গণ্য করে না,— তার বিশেষবিধি প্রাচীনকালীন প্রথা সঙ্গত, সে প্রথার অনুকুল যুক্তি নির্দেশও অনাবশ্যক। শুধু তাই নয় সেই অন্ন কে রেধেছে বা কে এনেছে তার নিৰ্ম্মলতা বা শোভনতার দিক থেকে নয়— অবিচারিত প্রথার দিক থেকে তার শ্রেয়স্করতা বিচার করাই সমাজের মতে বিহিত। এক্ষেত্রে অনুসংস্কারের দোহাই দিলে চুপ করে থাকব কিন্তু শ্রেয়ের দোহাই দিলে স্তব্ধ থাকা কঠিন। সহবাসসম্মতি আইন পাস হবার পূৰ্ব্বে বালিকাবধু সম্বন্ধে দুরাচার হিন্দুসমাজ স্বীকার করেছিল উক্ত আইনকে হিন্দুধৰ্ম্ম-বিরুদ্ধ বলে তুমুল আন্দোলন উঠেছিল। সেই রকম বিবাহ হিন্দুসমাজসম্মত একথা মানতে পারি কিন্তু তাই বলেই শ্রেয়স্কর একথা মানতে পারিনে। সমুদ্রপারে যাওয়া একদা সমাজে অবৈধ ছিল এখনো অনেক পরিমাণে আছে। একথা বলতে দোষ ছিল না যে, সমুদ্রপারে যাত্রা করলে হিন্দুসমাজে বর্জনীয়

  • Ovtøbr