পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারে চিত্তকে চালনা করবার ক্ষমতা আমাদের থাকেনা। কতবার চেষ্টা তাদের মনে কোনো প্রশ্নও নেই। জানতে চাওয়ার সঙ্গে জানতে পাওয়ার যে যোগ আছে সে যোগ ওদের বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ওরা কোনো দিন জানতে চাইতে শেখে নি,— প্রথম থেকেই কেবলি বাধা নিয়মে ওদের জানিয়ে দেওয়া হয়, তার পরে সেই শিক্ষিত বিদ্যার পুনরাবৃত্তি করে ওরা পরীক্ষার মার্কা সংগ্রহ করে। আমার মনে আছে শাস্তিনিকেতনে যখন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে মহাত্মাজির ছাত্রেরা ছিল তখন একদিন তাদের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলুম, আমাদের ছেলেদের সঙ্গে পারুল বনে বেড়াতে যেতে ইচ্ছা করো কি? সে বললে, জানি নে – এ সম্বন্ধে সে তাদের দলপতিকে জিজ্ঞাসা করতে চাইলে। আমি বললুম, আমাকে বলো। সে বললে আমি জানি নে। অর্থাৎ এ ছাত্র কোনো বিষয়ে স্বয়ং কিছু ইচ্ছা করবার চর্চাই করে না— তাকে চালনা করা হয় সে চলে, আপন থেকে তাকে কিছু ভাবতে হয় না। এ রকম সামান্য বিষয়ে মনের এতটা অসাড়তা যদিও সাধারণত আমাদের ছাত্রদের মধ্যে দেখা যায় না কিন্তু এর চেয়ে আরো একটুখানি শক্তরকমের চিন্তনীয় বিষয় যদি পাড়া যায় তবে দেখা যাবে সে জন্যে এদের মন একটুখানিও প্রস্তুত নেই। এরা কেবলি অপেক্ষা করে থাকে আমরা উপরে থেকে কি বলতে পারি তাই শোনবার জন্যে। সংসারে এ রকম মনের মতো নিৰুপায় মন আর হতে পারে না। এখানে শিক্ষাপ্রণালী সম্বন্ধে নানারকম পরীক্ষা চলচে, তার বিস্তারিত বিবরণ পরে দেবার চেষ্টা করব। শিক্ষাবিধি সম্বন্ধে রিপোর্ট এবং বই পড়ে অনেকটা জানা যেতে পারে কিন্তু শিক্ষার চেহারা মানুষের মধ্যে যেটা প্রত্যক্ষ দেখা যায় সেটাই সব চেয়ে কাজের। সেইটে সেদিন দেখে ○brs