পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এসেচি। পায়োনির্স কমুন বলে এ দেশে যে সব আশ্রম স্থাপিত হয়েচে তারি একটা দেখতে সেদিন গিয়েছিলুম। আমাদের শাস্তিনিকেতনে যে রকম ব্ৰতী বালক ব্ৰতী বালিকা আছে এদের পায়োনিয়র্স দল কতকটা সেই ধরণের। বাড়িতে প্রবেশ করেই দেখি আমাকে অভ্যর্থনা করবার জন্যে সিড়ির দু’ধারে বালক বালিকার দল সার বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে। ঘরে আসতেই ওরা আমার চারদিকে ঘেঁষাৰ্ঘেষি করে এসে বসল, যেন আমি ওদেরই আপন দলের। একটা কথা মনে রেখো এরা সকলেই পিতৃমাতৃহীন। এরা যে শ্রেণী থেকে এসেচে একদা সে শ্রেণীর মানুষ কারো কাছে কোনো যত্বের দাবী করতে পারত না, লক্ষ্মীছাড়া হয়ে নিতান্ত নীচবৃত্তির দ্বারা দিনপাত করত। এদের মুখের দিকে চেয়ে দেখলুম, অনাদরের অসম্মানের কুয়াষা-ঢাকা চেহারা একেবারেই নয়। সঙ্কোচ নেই, জড়তা নেই। তা ছাড়া সকলেরই মনের মধ্যে একটা পণ, সামনে একটা কৰ্ম্মক্ষেত্র আছে বলে মনে হয় যেন সৰ্ব্বদা তৎপর হয়ে আছে, কোনো কিছুতে অনবধানের শৈথিল্য থাকবার জো নেই। অভ্যর্থনার জবাবে আমি ওদের অল্প যা বলেছিলুম তারই প্রসঙ্গক্রমে একজন ছেলে বললে, পরশ্রমজীবীরা (bourgeoisie) নিজের ব্যক্তিগত মুনফা খোঁজে, আমরা চাই দেশের ঐশ্বর্ঘ্যে সকল মানুষের সমান স্বত্ব থাকে। এই বিদ্যালয়ে আমরা সেই নীতি অনুসারে চলে থাকি। একটি মেয়ে বললে, “আমরা নিজেরা নিজেদের চালনা করি। আমরা সকলে মিলে পরামর্শ করে কাজ করে থাকি যেটা সকলের পক্ষেই শ্রেয় সেইটেই আমাদের স্বীকার্য।” আর একটি ছেলে বললে, “আমরা ভুল করতে পারি কিন্তু যদি ইচ্ছা করি যারা আমাদের চেয়ে বড়ো তাদের পরামর্শ নিয়ে থাকি। প্রয়োজন হলে ছোট ছেলেমেয়েরা বড়ো ছেলেমেয়েদের মত নেয় এবং তারা যেতে °C>O