পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চলে না— নগদ দামে কেনা ছাড়া উপায় নেই। তাই পেটের অন্ন দিয়ে এরা জিনিষ কিনচে, উৎপন্ন শস্য, পশু মাংস, ডিম মাখন সমস্ত চালান হচ্চে বিদেশের হাটে। সমভ দেশের লোক উপবাসের প্রান্তে এসে দাড়িয়েচে। এখনো দেড় বছর বাকী। অন্যদেশের মহাজনরা খুসি নয়। বিদেশী এঞ্জিনিয়াররা কলকারখানা অনেক নষ্টও করেচে। ব্যাপারটা বৃহৎ ও জটিল, সময় অত্যন্ত অল্প। সময় বাড়াতে সাহস হয় না, কেননা সমস্ত ধনী জগতের প্রতিকূলতার মুখে এরা দাঁড়িয়ে, যত শীঘ্র সম্ভব আপন শক্তিতে ধন উৎপাদন এদের পক্ষে নিতান্ত দরকার। তিন বছর কষ্টে কেটে গেছে, এখনো দু বছর বাকী। সজীব খবরের কাগজটা অভিনয়ের মতো— নেচে গেয়ে পতাকা তুলে এরা জানিয়ে দিতে চায় দেশের অর্থশক্তিকে যন্ত্রবাহিনী করে ক্রমে ক্রমে কি পরিমাণে এরা সফলতা লাভ করচে। দেখাবার প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি। কেননা যারা জীবনযাত্রার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হয়ে বহুকষ্টে কাল কাটাচ্চে তাদের বোঝানো চাই অনতিকালের মধ্যে এই কষ্টের অবসান হবে এবং বদলে যা পাবে তার কথা স্মরণ করে যেন তারা আনন্দের সঙ্গে গৌরবের সঙ্গে কষ্টকে বরণ করে নেয়। এর মধ্যে সান্ধনার কথাটা এই যে, কোনো একদল লোক নয়, দেশের সকল লোকই একসঙ্গে তপস্যায় প্রবৃত্ত। এই সজীব সংবাদপত্র অন্য দেশের বিবরণও এইরকম করে প্রচার করে। মনে পড়ল পতিসরে দেহতত্ত্ব মুক্তিতত্ত্ব নিয়ে এক যাত্রার পালা শুনেছিলুম— প্রণালীটা একই, লক্ষ্যটা আলাদা। মনে করচি দেশে ফিরে গিয়ে শান্তিনিকেতনে সুরুলে সজীব সংবাদপত্র চালাবার চেষ্টা করব। (এই চিঠিগুলি যেন শান্তিনিকেতনের লোকে পড়তে পায়। তা ছাড়া প্রবাসীতে বের করারও প্রয়োজন আছে। প্রশান্ত” যদি ইচ্ছা করে এই চিঠিগুলি ইংরেজিতে তৰ্জ্জমা করে বিশ্বভারতীতে চালাতে পারে।) ●為8