পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আপন করতে পারে, যত ক্ষুদ্র ঈর্ষা বিদ্বেষ থেকে তার মন মুক্ত হয়— যতই সকলের সঙ্গে আপন আনন্দ ও ঐশ্বৰ্য্য ভাগ করে ভোগ করতে শেখে। তা যে না করতে পারে দুঃখ তাকে পুড়িয়ে মারে— সে সোনার মত উজ্জ্বল হয় না, তৃণের মত দগ্ধ হয়। পৃথিবীতে মানব জীবন নিয়ে এসেছি— কিছুদিনের মেয়াদ— সেই কয়েকটি বছরকে সুন্দর করে শুভ্র করে ঠাকুরের পায়ে নিৰ্ম্মল ফুলের মত দিয়ে যেতে পারি এই কামনাকেই সব চেয়ে বড় করে রাখ। রাণু, তুমি যদি আমাকে যথার্থ ভালবাস তাহলে আমার ভাল কাজে তোমার আনন্দ যেন হয়, আমি সকলকেই ভালবাসি এতেই যেন তোমার মন প্রসন্ন হয়, যারা আমার কাছে আসবে তারা আমার কাছ থেকে যেন প্রীতির দান ও পূজার নিৰ্ম্মাল্য নিয়ে যেতে পারে এই তোমার যেন কামনা হয়। আমাকে ছোট করে দেখো না, ছোট করতে চেয়ো না— তাহলেই, আমার সঙ্গ পেয়ে আমার স্নেহে আমার আশীৰ্ব্বাদে তুমিও বড় হয়ে উঠবে, তোমার মন তাহলে ক্ষুদ্রতা থেকে মুক্ত হবে। আমি ভিতরের সৌন্দৰ্য্যকে সব চেয়ে ভালবাসি— যাদের স্নেহ করি তাদের মধ্যে সেই সৌন্দৰ্য্যটি দেখবার জন্যে আমার সমস্ত মনের তৃষ্ণা। মেয়েদের মধ্যে এই সৌন্দৰ্য্যটি যখন দেখা যায় তখন তার আর তুলনা কোথাও থাকে না। কিন্তু মেয়েরা যখন কেবল সংসারে জড়িয়ে থাকে, সব তাতেই কেবল আমার করে, নিজের ছোট ছোট সুখ দুঃখকে নিয়ে পৃথিবীর সব মহৎলক্ষ্যকে আড়াল করে রাখে, যখন তারা বড় চেষ্টার বাধা, বড় তপস্যার বিঘ্ন হয়ে কেবল মাত্র লোকের মন ভোলানোকেই নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বলে মনে রাখে তখন বাইরে তাদের যতই সৌন্দৰ্য্য থাক সে সৌন্দৰ্য্য মায়া মাত্র, সে সৌন্দৰ্য্য সত্য নয়। আমি এই আশা করে আছি আমার কাছ থেকে তুমি এই কথাটি অস্তরের সঙ্গে বুঝে নেবে— তাহলেই তুমি আমাকে সত্য করে বুঝতে পারবে। আমাকে যদি সত্য করে বুঝতে না পার তাহলে আমাকে সত্য করে ভালবাসতেও পারবে না— তাহলে vථbr