পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে আমার কোলের কাছে দেখেচে তারই ঐ কথা মনে হয়েচে । তাকে আমরা বেলা বলে ডাকতুম, তার চেয়ে ছোট আর এক মেয়ে আমার ছিল তার নাম ছিল রাণু, সে অনেকদিন হল গেছে। কিন্তু দুঃখের আঘাতে যে অবসাদ আসে তা নিয়ে মান হতাশ্বাস হয়ে দিন কাটালে ত আমার চলবে না। কেননা আমার উপরে যে কাজের ভার আছে ; তাই আমাকে ঃখ ভোগ করে দুঃখের উপরে উঠতেই হবে। নিজের শোকের মধ্যে বদ্ধ হয়ে এক মুহুৰ্ত্ত বৃথা কাটাবার হুকুম আমার নেই। সেই জন্যেই খুব বেদনার সময় তুমি যখন তোমার সরল এবং সরস জীবনটি নিয়ে খুব সহজে আমার কাছে এলে এবং এক মুহুৰ্ত্তে আমার স্নেহ অধিকার করলে তখন আমার জীবন আপন কাজে বল পেলে— আমি প্রসন্ন চিত্তে আমার ঠাকুরের সেবায় লেগে গেলুম। কিন্তু তোমার প্রতি এই স্নেহে যদি আমাকে আমার প্রভুর কাছে আমি তার কি জবাব দিতুম ? আমি এই বিদ্যালয়ে যে সেবার মধ্যে তার সেবার ভার নিয়েচি সে এবার আমার পক্ষে আগেকার চেয়ে আরো অনেক সহজ হয়েচে— আমার হৃদয়ের গ্রন্থি আরো অনেক আলগা হয়েচে– তাই আমি দ্বিগুণ স্নেহে এবং আনন্দে এবার আমার বিদ্যালয়ের কাজে লেগেছি। তোমাকে আমার কাছে পাঠিয়ে আমার ঠাকুর আমাকে আরো বেশি বল দিয়েচেন । তুমিও তেমনি বল পাও আমি কেবল এই কামনা করচি।— তোমার ভালবাসা তোমার চারদিকে সুন্দর হয়ে বাণামুক্ত হয়ে ছড়িয়ে যাক— তোমার মন ফুলের মত মাধুর্য্যে পবিত্রতায় পূর্ণ বিকশিত হয়ে তোমার চতুৰ্দ্দিককে আনন্দিত করে তুলুক্‌। নিজেকে অকারণে পীড়িত করো না এবং অন্যকে পীড়িত কোরোনা— নিজেকে নম্রতার রসে পরিপূর্ণ করে সেবার কাজে সুমধুর করে তোলো। আমি তোমাকে যখন পারব চিঠি লিখব— কিন্তু চিঠি যদি লিখতে দেরি হয়, লিখতে যদি নাও পারি তাতেই বা এমন কি দুঃখ। তোমাকে যখন স্নেহ 8 ×