পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করা শক্ত নয় (তখনও তিনি এগারো বছর পূর্ণ করেন নি)। আর বিষয়বস্তু? এই বালিকা জানাচ্ছেন, তিনি সেই বয়সেই ক্ষুধিত পাষাণ ছাড়া গল্পগুচ্ছের সব গল্পগুলিই পড়ে বুঝতে পেরেছেন— তার পড়া বইয়ের তালিকায় আছে গোরা, নৌকাডুবি, জীবনস্মৃতি, ছিন্নপত্র, রাজর্ষি, বৌঠাকুরানীর হাট, গল্পসপ্তক (তার মা যেটি জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন), ডাকঘর, অচলায়তন, রাজা ও শারদোৎসব— কোনো-কোনো জায়গায় বুঝতে না পারলেও তার ভালো লেগেছিল। এ ছাড়া তিনি চতুরঙ্গ, ফাল্গুনী ও শান্তিনিকেতন পড়তে আরম্ভ করেছিলেন, কিন্তু বুঝতে না পারায় পড়া বিশেষ এগোয় নি। উপরস্তু তিনি জানিয়েছেন, তিনি ও তার ছোটো বোন ‘কথা’ ও ছুটির পড়া’ থেকে কবিতা "মুখুস্ত করেন। সুতরাং এমন একজন লেখককে দেখতে চাওয়া বা বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজেদের শোবার ঘরে শুতে দেওয়া ও প্রিয় পুতুলগুলি দেখানোর প্রতিশ্রুতি দান করা কিছুমাত্র অস্বাভাবিক নয়। ক্ষুদ্র পাঠিকা কিন্তু শুধু প্রশংসামুখর নন, ক্ষুধিত পাষাণ গল্পে ইরাণী বাদীর কাহিনীকে অসম্পূর্ণ রাখা বা ‘জয়পরাজয়’ গল্পে রাজকন্যার সঙ্গে শেখরের বিয়ে না দিয়ে তাকে মেরে ফেলা যে রবীন্দ্রনাথের পক্ষে ঠিক কাজ হয় নি ও তার সংশোধন আবশ্যক, অনুরোধের ছদ্মবেশে এই পরোক্ষ সমালোচনাও তার পত্রে আছে। তা ছাড়া আছে প্রায় জন্মগত আড়ি করে দেওয়ার ভয় দেখানো । কাজেই এমন একটা ও পরে আরও অনেক চিঠি পড়ে রবীন্দ্রনাথ বহুবিধ ব্যস্ততা সত্ত্বেও এই বালিকা বন্ধুর সঙ্গে এক দীর্ঘকালস্থায়ী পত্রালাপে প্রবৃত্ত হবেন, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। রবীন্দ্রপ্রতিভার একটি প্রধান বৈশিষ্টা, তার শৈশব ও তারুণ্যের সজীবতাকে সারাজীবন রক্ষা করে যাওয়া, সেই কারণেই সাহিত্য ও কর্মে হতে পেরেছেন— তাই রাণু যখন তার বয়সকে অপরিবর্তনীয় সাতাশ বছরে বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন, রবীন্দ্রনাথ সাগ্রহে তাকে Փ ՀԵr