পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেছেন এই সংকট কাটানোর জন্য— এমন-কি, রাণুর ভাবী শাশুড়ি লেডি যাদুমতী মুখোপাধ্যায়কে একটি দীর্ঘ চিঠিও লিখেছেন। শুভাকাঙক্ষার আন্তরিক প্রয়াস ছাড়াও চিঠিটি উল্লেখযোগ্য রাণুর স্বভাবপ্রকৃতির বিশ্লেষণ ও তার প্রতি নিজের মনোভাবের অকপট প্রকাশের জন্য। রবীন্দ্রনাথ লেখেন: রাণুকে তাহার শিশুকাল হইতে জানি এবং একান্তমনে স্নেহ করি। ইহা জানি তাহার চরিত্র কলুষিত হওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব। তাহার বয়সে বাঙালীর ঘরের মেয়েরা যে সাধারণ অভিজ্ঞতা সহজে লাভ করে তাহার তাহা একেবারেই ছিল না। সে এমনি শিশুর মত কাচা যে তাহার কথাবাৰ্ত্তা ও আচরণ অনেক সময় হাস্যকর হইত। এইরূপ অদ্ভুত অনভিজ্ঞতাবশত লোক ব্যবহার সম্বন্ধে তাহার কোনো ধারণা ছিল না। এই কারণে রাণুর বিবাহ সম্বন্ধে আমার মনে বিশেষ উদ্বেগ ছিল। আমি তাহার জন্য এমন সৎপাত্ৰ কামনা করিতেছিলাম যে তাহার একান্ত সরলতার যথার্থ মূল্য বুঝিবে এবং লৌকিকতার ক্রটি ক্ষমা করিবে।. আপনি আমার কন্যা বেলাকে জানিতেন। তাহার ছোটভাই শমী বঁচিয়া নাই। আমি অনেকবার ভাবিয়াছি যে, সে যদি বাচিয়া থাকিত তবে রাণুর সঙ্গে নিশ্চয় তাহার বিবাহ দিতাম। তাহার কারণ রাণুর মধ্যে অসামান্যতা আছে। বুদ্ধিতে সকল বিষয়েই তাহার আশ্চৰ্য্য তীক্ষতা— কিন্তু তাহার চেয়ে বড় কথা তাহার মনের নিষ্কলুষ সরলতা। ঠিক এমনটি আমি আর কোথাও দেখি নাই।...' লেডি যাদুমতী ও স্যার রাজেনকে তিনি শান্তিনিকেতনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সমস্ত বিষয় মুখোমুখি আলোচনা করার জন্য। এই আলোচনা সংঘটিত হয়েছিল কি না জানা নেই, কিন্তু বিবাহ স্থির হতে বাধা হয় নি। জোড়াসাঁকোর ‘বিচিত্রা’ বাড়িতে থেকে বিবাহ দেবার জন্য ফণিভূষণের শ্বশুরবাড়ি সেই প্রভাব অনুমোদন করে নি। এমন-কি, বিবাহের পূর্বে NVG