পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিয়ে তিনটের গাড়িতে চড়ে একেবারে এক নিঃশ্বাসে বরিশালে চলে যাবে। তুমি বোধহয় জান, বরকে সমস্ত রাত্রি মন্ত্ৰ পড়িয়ে উপোষ করিয়েও লোকের মন সন্তুষ্ট হয় না। তার উপরে নানা প্রকার ঠাট্টার উৎপাত আছে। পানের মধ্যে কুইনীন দিয়ে কাচা শাকে মসলা মাখিয়ে নানারকম উগ্র রসিকতায় হতভাগ্যকে পীড়িত করবার চেষ্টা হয়েছিল। এই সমভ নিদারুণ কৌতুকে আমাদের কমল দেবী সবচেয়ে উৎসাহী। কিন্তু বর সাবধানী— তাকে ঠকাতে পারেনি। তোমাদের জামাই বাবুকে তোমরা বোধহয় জব্দ করেছিলে। কিন্তু শুনতে পাই শাস্তিরা থিয়েটার করে তার চিত্তবিনোদন করেছিল— এরকম রসিকতার প্রলোভন থাকলে মানুষ দিনে তিন চার বার করে বিয়ে করতে রাজি হয়।— কালকের দিন পর্যন্ত খুব বৃষ্টি হয়ে আজ বর্ষণ বন্ধ হয়ে গেছে তাই এখন খুব গুমট করেচে। খেয়ে এসেই তোমাকে লিখতে বসেছি। এখনি হয়ত বাসি-বিয়ের কোনো একটা সভায় আমার ডাক পড়বে তখন আর লেখবার সময় পাব না। আজ আবার আর এক উপদ্রব আছে। পেরুর (দক্ষিণ আমেরিকার) কন্সাল জেনেরাল আজ বিকেলের গাড়িতে আমাদের বিদ্যালয় দেখতে আসবে। তাহলে আজ রাত্রে সে আর যাবে না— কাল কতক্ষণ থাকবে কে জানে। কলকাতার মত জায়গায় মানুষ দেখা করতে এসে অল্পক্ষণের মধ্যে চলে যায়— এখানে তা হবার জো নেই। আমি এভুজকে বলে দিয়েছি তার ঘরেই তিনি ওকে স্থান দেবেন— কোনো মতে দুজনে ঝগড়া না করে একঘরে দুটো দিন কেটে যাবে। যাই হোক তিনি আসবার আগেই তোমার চিঠি রওনা করে দিয়ে একটু বিছানায় গড়াবার চেষ্টা করা যাবে— কেননা কাল পূরোপুরি ঘুম হয়নি— রাত্রে মাঝে মাঝে ঢাক ঢোল এবং ছেলেদের চীৎকার প্রায়ই চলছিল। ধোবাদের তিনটে গাধা মনে করেছিল তাদেরও বুঝি নিমন্ত্রণ আছে– তাই যথোচিত সমাদর হচ্চে না বলে মাঝে মাঝে চীৎকার করে উঠছিল— সেটা ঠিক রসন চৌকির মত শোনাচ্ছিল না। و ج6