পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘুরে বেড়াই— কিন্তু এই কুঁড়েমিটুকু, উপর থেকে আমার জন্যে বরাদ্দ হয়ে গেছে— এ জন্যে আমি কারো কাছে দায়িক নই। সবই ত বুঝলুম, কিন্তু কুঁড়েমি করি কখন বল ত ? তুমি ত দেখেই গেছ কাজের আর অন্ত নেই। ঘোড়াকে বিধাতা বাতাসের মত দ্রুতগামী এবং মুক্ত করে সৃষ্টি করেছিলেন— কিন্তু সেই ঘোড়াকেই মানুষ জিনে লাগামে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলে— আমারও সেই দশা। বিধাতার ইচ্ছা ছিল আমি ভরপুর কুঁড়েমি করে কাটাই কিন্তু যে গ্রহের হাতে পড়েছি সে আমাকে কষে খাটিয়ে নিচ্চে। বয়স যখন অল্প ছিল তখন খাটুনি এড়িয়ে ইস্কুল পালিয়ে পদ্মার নির্জন চরে বোটের মধ্যে লুকিয়ে বেশ চালাচ্ছিলুম— কিন্তু যখন থেকে তোমার পঞ্জিকা অনুসারে আমার “সাতাশ" বছর বয়স হয়েচে তখন থেকেই কাজের জালে আপনি ধরা দিয়ে কেটে বেরবার আর পথ পাইনে। নইলে আগেকার মত হলে আমার পক্ষে আলমোড়ায় যেতে কতক্ষণ লাগত বল। তবু তোমরা সেই পাহাড়ের উপরে মুক্ত হাওয়ায় স্বাস্থ্য এবং আনন্দ ভোগ করচ একথা মনে করে ভাল লাগচে— তোমার চিঠি সেখানকার লাল ফুলের পাপড়িতে রাগ-রক্ত হয়ে আমার হাতে এসে পেচিচ্চে। সেখানকার ফুলে যে রক্তিমা দেখতে পাচ্চি— তোমার গালে সেই রক্তিমা সংগ্রহ করে আনবে এই আশা করে আছি। আজ আর সময় নেই— অতএব ইতি। ১১ই ভাদ্র ১৩২৫ তোমার রবিদাদা ۹ و