পাতা:চিঠিপত্র (ঊনবিংশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপটি হারিয়ে এখন আপনি বিশ্বের হয়েছেন, হিন্দুনিন্দুক হয়েছেন, তাই না বাঙ্গালীর পছন্দ হচ্ছে না আপনাকে। ছাড়তেও পারছে না। কেন না, আর একটি রবীন্দ্রনাথ আজও সৃষ্টি হননি। তাই আঘাত দিচ্ছে আপনাকেই। ঐ আঘাত কচিৎ আমার কলমেও আসে, তবুও আমি ছাড়া আর কেউ কিছু বললে সেটা কেন যে আমার বেদনার সৃষ্টি করে, তা বলতে পারি না।” সজনীকান্ত ‘বঙ্গশ্রী’র সম্পাদক হয়েছিলেন মাঘ ১৩৩৯ থেকে পৌষ ১৩৪১ পর্যন্ত। ‘বঙ্গশ্রীও রবীন্দ্রনাথ রিফিউজড় লিখে ফেরত পাঠান। সেই সময় আমার দিদিমা নববর্ষে রবীন্দ্রনাথকে প্রণাম জানিয়ে ১৩৪১ বঙ্গাব্দে একটি চিঠি লিখেছিলেন। আমার দিদা ছিলেন অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় মানুষ। সম্ভবত হেমন্তবালা দেবীকে তিনিও অনেক সময় এই বিরোধের উপশম করার জন্য কিছু তদবির করতেন। এবং বোধহয় তারই আগ্রহাতিশয্যের ফলস্বরূপ তিনি নিজেই রবীন্দ্রনাথকে নববর্ষে প্ৰণাম জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। এক্ষেত্রে তার ভূমিকাটি ছিল অনেক বৃহৎ ও কঠিন। তিনিই চেষ্টা করতেন সর্বদা, অন্তঃপুরবাসিনীর কাছে দাদু সম্বন্ধে সুমন্ত্রণা দিয়ে প্রথমে তার হৃদয়ে পাকা আসন গড়তে। তারই উদাহরণস্বরূপ হেমন্তবালা দেবীর আর-একটি চিঠির অংশ উদ্ধৃত হল— “সুধারাণী বললেন, সজনীবাবু সব চিঠি পড়ে খুশীই হয়েছেন, কিছু মনে করে নি। তিনি জানিয়েছেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের পরমভক্ত। তার রবীন্দ্রনাথ খ্ৰীতি অকৃত্রিম। সেই জন্যেই যা কিছুতে রবীন্দ্রনাথের বৈশিষ্ট্যহানি বা মর্যাদাহানি হয়, তার বিরুদ্ধে বড় লেখনী ধারণ করে থাকেন। তিনি আপনাকে একখানি চিঠি লিখবার জন্যে আমার অনুমতি চেয়েছেন ।... মনে হচ্ছে যেন আপনার চিঠিপত্র পড়ে একটু নরম হয়েছেন এবং আমিও পূর্বোক্তগুলির সম্বন্ধে তার ভ্রম সংশোধনের চেষ্টা করেছি। ২৩৩