পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিশে গেচে । সুধীন্দ্রদের মনে এখন কিছুমাত্র বিমুখভাব নেই। সামাজিকতা করবার মতো শক্তির অভাব ভারতীয় যাত্রীদের মধ্যেই দেখি । এই চরিত্রগত অভাবই শান্তিনিকেতনে এতকাল প্রকাশ পাচ্চে । আমরা শক্তি থাকলে অতি সহজেই যুরোপীয় বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেলামেশা করতে পারতুম। কিন্তু তাতে যে পরিমাণে প্রয়াসের দরকার সেটুকু এ পর্য্যস্ত স্বীকার করতে পারি নি। ওদের আমরা দূরেই রেখে দিয়েচি। অথচ শান্তিনিকেতনে এই অধ্যাপকেরা এমন কোনো ব্যবহার করেন না যাতে আমাদের অভিমান ক্ষুন্ন হয়। এটা নিতান্তই আমাদের স্বভাবের দৈন্ত । যতই বিদেশে আসি ততই এটা আরো স্পষ্ট হয়ে প্রকাশ পায়। আমাদের এই গ্রাম্যতার জন্যে আমি অত্যন্ত লজ্জা বোধ করি। ভারতের ভিন্ন প্রদেশের লোকের সঙ্গেও আমরা এই চিত্তসঙ্কীর্ণতাবশতই সহজে মিলতে পারি নে। অন্ত প্রদেশের ছাত্ররা ওখানে বেড়ার মধ্যে বাস করে— আমরা একটুও এগিয়ে গিয়ে ওদের আপন করে নিতে পারি নে। তাতে নিজেদের যেটুকু স্বচ্ছন্দতার ব্যাঘাত ঘটে সেটুকুও সহ্য করা আমাদের পক্ষে শক্ত। বিশ্বভারতীর ভিতরকার আদর্শ এই কারণেই আমাদের লোকের পক্ষে এত বেশি দুঃসাধ্য— ভারতের বাইরেই এর প্রশস্ত ক্ষেত্র। কিন্তু শান্তিনিকেতনেও যদি আমরা বিদেশকে স্বদেশে না টানতে পারি তাহলে ঐ আশ্রমের আদর্শ একেবারেই ব্যর্থ হল । শুধু ক্লাস চালানো আমাদের কাজ নয়। আত্মীয়তার সম্বন্ধকে ওখানে সৰ্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত করতে হবে। যত্র বিশ্বং ভবত্যেক নীড়ং ఇ: