পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতিঘাত কেবলি কাজ করচে। সেখানে মানুষের সম্মিলিত শক্তি ব্যক্তিগত শক্তিকে অহরহ রাখচে জাগিয়ে। ভারতবর্ষের দিগন্ত আবদ্ধ হয়ে রয়েছে সঙ্কীর্ণতার প্রাচীরে, সেই বেড়ার মধ্যে যা হচ্চে তাই হচ্চে, তার বাইরের দিকে বেরোবার কোনো গতি নেই। যেখানে জীবনের ভূমিকা এত ছোটো সেখানে মানুষের কোনো চেষ্টা চিরন্তনের ক্ষেত্রে কোনো বৃহৎরূপ প্রকাশ করবে কিসের জোরে । ইতিহাসের যে পটে আমাদের ছবি উঠচে, সে ছিন্ন ছিন্ন পট, তার চিত্রের রেখা ক্ষীণ, বর্ণ অনুজ্জল, তাতে প্রবল মনুষ্যত্বের স্পষ্টতা ব্যক্ত হবার পরিপ্রেক্ষণিক পাওয়া যায় না। তাই আমাদের পলিটিক্স, সাহিত্য, কলাবিদ্যা সব কিছুরই মাপকাঠি ছোটো । এই নিয়ে মহাজাতির পরিচয় গড়ে তোলা অসম্ভব। এই পরিচয়ের অভাবে আমাদের আত্মসম্মানবোধের অাদর্শ নীচে নেমে যায় । সৰ্ব্বত্রই দেখা গেল Vhite Paper নিয়ে আলোচনা চলচে। ছেলেবেলায় কাঙালীবিদায়ের যে দৃশ্য দেখেছি তাই মনে পড়ে গেল। ধনীর প্রাসাদ অভ্ৰভেদী, তার সদর ফাটক বন্ধ। বাহিরের আঙিনায় জীর্ণ চীরপর ভিক্ষুকের ভীড় । কেউ পায় চার পয়সা, কেউ দু আনা, কেউ চার আনা। তক্‌মপর দ্বারীদের সঙ্গে তাদের যে দাবীর সম্বন্ধ তা কেবল কণ্ঠের জোরে। এই জন্যে তারস্বরের চর্চাটাই প্রবল হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে যেটা লজ্জা, সে এই ভিক্ষুকদের নিজেদের মধ্যে কাড়াকড়ি ছেড়াছেড়ি নিয়ে। যে ব্যক্তি দান করছে সুদূর উদ্ধে দোতলার বারান্দায় তাদের আত্মীয়-কুটুম্বের মজলিশ। У 8. o