পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাবি অজন্তার গুহাচিত্রগুলির কথা, তখন নামের মায়াবন্ধন থেকে মুক্তির আস্বাদ মনের মধ্যে উপলব্ধি করি। ওরা কা’র, একদিন অন্ধকারে বসে যারা দিনের পর দিন বিচিত্র স্বষ্টির আনন্দকে গুহাপ্রাচীরে চিত্রিত করেছিল ? তারা তো এই স্থষ্টির সাফল্যেই আপন প্রয়াসের মূল্য হাতে হাতেই পেয়েছিল। তাদের যে-আত্মা সত্য সেই পেয়েছে আনন্দ, তাদের যে নাম মায়া খ্যাতির মজুরী তার জন্তে ওরা দাবী করে নি ? অনাগত কালের সম্মুখে ঐ নামটাকে চাদার ঝুলির মতো পেতে রাখতে চাই কেন ? এই দানের লোভের মতো এতবড়ো বিড়ম্বনা আর কী হতে পারে ? আজ সকালে আকাশে আতপ্ত বসন্তের আভাস এসেছে, আমার সামনে ঘাসের মধ্যেকার অনামা ফুলগুলোর উপর লাল ডানাওয়ালা ছোটো ছোটো প্রজাপতি বাকে বাকে উড়ে বেড়াচে ; এই সদ্য মুহূৰ্ত্তের প্রাণনের আনন্দে আমার মনটা ফাঙ্কনের তরুণ আলোকে ঐ কৃষ্ণচূড়া গাছের হিল্লোলিত পাতার মতো ঝলমল করচে। জীবনের অঞ্জলি ভরে এই তো পাচ্চি যা পাওয়ার জিনিষ, এর চেয়ে আরো লোভ কেন ? যখন কিছু লিখেচি সেও তো আপনার মধ্যে এই রকম পাতার হিল্লোল, হাওয়ার চাঞ্চল্য, রৌদ্রের ঝলক, প্রকাশের হর্ষবেদনা। সে তো বিনানামের অতিথি, গরঠিকানার পথিক । তাকে নামের ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে হাটে হাটে ফিরিয়ে বেড়াবার কী দরকার! নামটা মায়া বলেই নাম নিয়ে যত ঈর্ষা বিদ্বেষ, বিবাদ বিরোধ। একদিন আমার লক্ষ্যের অতীত অজানা লোকালয়ের রাজপথে > 8b*