পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবলের বাহুবল প্রয়োগের যুদ্ধরূপটা আমাদের কাছে স্পষ্ট আকারে দেখা দেয়। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের অর্থ বুঝতে বিলম্ব হয় না। কিন্তু যুদ্ধের চেয়ে দারুণতর অভিঘাত আছে তার লাল রংটা চোখে পড়ে না বলে সে সম্বন্ধে ইন্টরন্যাশনাল দরদ জাগাবার সম্ভাবনা নেই। তারি সাংঘাতিকতা দুৰ্ব্বল জাতির পক্ষে সবচেয়ে মৰ্ম্মান্তিক । আমাদের মতো দুৰ্ব্বল যখন মার খায় তখন স্বীকার করে নিতে হয় সেটা অনিবাৰ্য্য। আমরা মারের জন্যে নিজের হাতে নিজেকে তৈরি করে নিয়েছি, অথচ বোকার মতো কান্নাকাটি করি। আমাদের কলসকে শতছিদ্র করেই গড়েছি, ঘরে যখন আগুন লাগে জল তখন যায় নিকেশ হয়ে ; ধৰ্ম্মের নামে সেই ফুটো ঘটটাকে মঙ্গলঘট বলেই সযত্নে তুলে রাখি, তার পরে জলাভাব নিয়ে পরের অনুকম্পার পরিমাণ বিচার করি। এমন স্থলে বিদেশী রাজন্তবর্গকে দোষ দিয়ে আত্মপরিতোষ লাভের চেষ্টা লজ্জাজনক মূঢ়তা। ইতিহাসে আমাদের চেয়ে অনেক মজবুৎ জাত মরেছে, আর আমরাই যে তুর্বলতা বুকে অঁাকড়ে ধরে চিরকাল বেঁচেই থাকব বিধাতার এমন আছরে ছেলে আমরা নই। অতএব মরণের রোগীর চিকিৎসা শেষ পৰ্য্যন্তই করতে হবে কিন্তু আশা ছেড়ে দিয়ে। এত কথা তোমাকে বলবার উদ্দেশ্য হচ্চে এই যে, পচাত্তর বছরের জীর্ণ শরীরের বোঝা নিয়ে আয়ুপথের শেষ মাইলট যখন চলতে হচ্চে তখন উপস্থিত দায় সামলানোই যথেষ্ট কঠিন, আর কোনো উত্তেজনায় এই ফাটলধরা মনটাকে দোল খাওয়াতে উৎসাহ হয় না। ۹وف S