পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মতকেই প্রাধান্ত দিয়ে। আমার লেখার ভালোমন্দ সব সময়ে আমি নিঃসংশয়ে বুঝতে পারি নে। যেমন আমার “শেষের কবিতা” তেমনি “চার অধ্যায়”, ওর ভাষার রসেই ওরা সজীব প্রফুল্ল। অর্থাৎ কবিতার যে মূল্য, প্রধানত ওদের সেই মূল্য। ভাষান্তরে সেটা টেকে না। মূল ভাষার রস বাদ দিয়ে বাকি যেটুকু থাকে সেটা সাহিত্যভাণ্ডারে রক্ষণীয় কিনা জানি নে। সেইজন্তে ইংরেজি “চার অধ্যায়” সম্বন্ধে আমার মনে বিশেষ উৎসাহ নেই। আসল কথা খ্যাতির ওঠানামার বাজারে নতুন কারবার করতে আমার ঔৎসুক্য চলে গেছে। আমার একটা নতুন কবিতার বই বীথিকা নাম ধরে বেরিয়েছে। এই চিঠি পাওয়ার অনতিকালের মধ্যে পাবে। কীরকম লাগবে জানি নে। এর অধিকাংশ কবিতা একসূত্রে গাথা নয়। তারা প্রত্যেকে স্বতন্ত্র। একটা থেকে আরেকটাতে যাবার সেতু না থাকাতে মনকে ফঁাক ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে চলতে হয়, পড়বার আরাম তাতে ঘনিয়ে উঠতে পারে না । কেবল এক একখানি কবিতা এক একদিনের মতো যদি জোগান দেওয়া যেতে পারত তা হলেই ভালো হোতো। কিন্তু এরকম ছাপানো বই হাটের মতো, সেখানে বিচিত্র অসংলগ্ন পণ্যের বাজার। তাদের আলাদা আলাদা রূপ, আলাদা আলাদা দাম । তাই আশঙ্কা হচ্চে এ বইটা সাধারণের গ্রহণযোগ্য হবে না। কিন্তু সেটা দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। কবিতা জিনিষটা হাত পেতে সদ্য গ্রহণ করবার নয়। গ্রহণ করা ব্যাপারটার একটা পরিণতিকাল আছে— ❖ ዓ .