পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারাই মনের স্বাস্থ্য এবং সম্মান রক্ষার পক্ষে অত্যাবশ্যক। আজ তোমাকে চিঠি লেখার পরেই দেখতে পেলুম, মনের তলায় যে পাকের পলি পড়ে নাড়া খেলেই হঠাৎ সমস্ত স্রোতটাকেই সে ঘুলিয়ে ফেলে। চরিত্রের এই অসন্ত্রমের থেকে নিস্কৃতি চাই— নালিশের ধুলো-ওড়া বাতাসের উদ্ধে যেখানে স্তব্ধ নিৰ্ম্মল শান্তি সেখানে ডানায় ভর করে পৌছতে পারলে ক্ষীণতা থেকে ইতরতা থেকে রক্ষা পাব । বাইরের আদালত থেকে আমার সব নালিশ উঠিয়ে নিলুম। উপরের আদালতে জীবনের মামলায় জিৎ হবেই এই দৃঢ় প্রত্যাশার উপরে জীবনের পরিণামে যেন অবিচলিত প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারি। কিছুকাল পূর্বে আমার লেখার ইংরেজি অনুবাদ প্রভৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলে তখন তার ধাক্কা অামার মনকে লাগে নি— আমি স্পষ্ট অনুভব করেছিলুম উপস্থিতকালের দেনাপাওনার তর্ক অশ্রদ্ধেয়— হিসাব যখন নিকাশ হবে তখন সে হবে আমার অগোচরেই, তার ফলাফল আমার অতীত— এবং উপস্থিতকাল যে ফল নিয়ে আমার সম্মুখে ধরে তার পরিমাণ ও মূল্য নিয়ে হৰ্ষশোক ছেলেমানুষী। কাজের আনন্দটাই থাক্ আমার, তার বেশি আর যা কিছু দিয়ে নিজের নামটাকে ফুলিয়ে তুলতে ব্যস্ত হই তার প্রতি যেন সম্পূর্ণ বিমুখ হতে পারি এই আমার কামনা। নামের মোহ জড়িয়ে আছে মনকে কুয়াষার মতে, লোকমুখের বাক্যের কুয়াষা— ছিন্ন হয়ে যাক সে– নিৰ্ম্মল আলোর মধ্যে মুক্তি পাক অন্তরাত্মা। ইতি ৭,৪৩৬ রবীন্দ্রনাথ 〉b->