পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২ জুন ১৯১৭ હૈં "কল্যাণীয়েষ্ণু তোমার চিঠিখানি পেয়ে আমি মনে খুব বেদনা বোধ করচি। তার কারণ, এক সময়ে যখন আমার বয়স তোমারই মত ছিল তখন আমি যে নিদারুণ শোক পেয়েছিলুম সে ঠিক তোমারই মত। আমার যে পরমাত্মীয় আত্মহত্যা করে মরেন শিশুকাল থেকে আমার জীবনের পূর্ণ নির্ভর ছিলেন তিনি। তাই তার আকস্মিক মৃত্যুতে আমার পায়ের নীচে থেকে যেন পৃথিবী সরে গেল আমার আকাশ থেকে আলো নিভে গেল। আমার জগৎ শূন্ত হল, আমার জীবনের স্বাদ চলে গেল। সেই শূন্যতার কুহক কোনোদিন ঘুচবে এমন কথা আমি মনে করতে পারিনি। কিন্তু তার পরে সেই প্রচণ্ড বেদন থেকেই আমার জীবন মুক্তির ক্ষেত্রে প্রথম প্রবেশলাভ করলে। আমি ক্রমে বুঝতে পারলুম জীবনকে মৃত্যুর জানলার ভিতর থেকে না দেখলে তাকে সত্যরূপে দেখা যায় না। মৃত্যুর আকাশে জীবনের যে বিরাট মুক্তরূপ প্রকাশ পায় প্রথমে তা বড় দুঃসহ। কিন্তু তার পরে তার ঔদার্য মনকে আনন্দ দিতে থাকে। তখন ব্যক্তিগত জীবনের মুখদুঃখ অনন্ত স্বষ্টির ক্ষেত্রে হাল্কা হয়ে দেখা দেয়। বিশ্বের রথ চলেচে, মানুষের ইতিহাসের রথ চলেচে– বাধাবিঘ্ন বিপদ সম্পদের মধ্যে দিয়ে সে আপনার গতিবেগে আপনার পথ কাটচে— "ל