পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সরু পথ, চলেছে সেই পল্লীর দিকে, যার সুখদুঃখের সঙ্গে মিশেছে সবুজ বনের ছায়া, যার স্বর গুঞ্জনধ্বনির উপরে ওঠে না। দূর সমুদ্রতীরের আহবানে ক্ষণে ক্ষণে সাড়া দিতে যাই, নিজের বাণীর সূত্রে সেখানকার সঙ্গে পরিচয়ের সম্বন্ধ গাথতে চাই, কিন্তু দুই সূত্রে গ্রন্থি বাধবার নৈপুণ্য আমার নেই বলে সন্দেহ হয়। তখন বুঝতে পারি বাইরের বিশ্বে মাঝে মাঝে ভ্রমণ করা চলে কিন্তু বাস করতে হয় নিজের বাস্তুসীমানার মধ্যে । সেখানকার বাস্তুদেবতার বাণী দিয়ে যখন শিল্প স্থষ্টি করি তখন সম্পূর্ণ ভোলা ভালো বাইরের বাজারের কথা, সব দেশের সব কবিরাই তাই করে থাকে। আমাদের সঙ্গে ওদের দেশের তফাৎ এই যে ওদের পরিবেশটাই বড়ো, ওদের আত্মপরিচয়ের পরিপ্রেক্ষণিক ওদের অাপন সীমানার মধ্যেই মস্ত, তার মূল্য অনেক বেশি। মানুষের মধ্যে আপন পরিচয়ের সম্বন্ধ বড়ো করা সত্য করা, বড়ো করে বাচা । সেইজন্যে সেই বহুবিস্তৃত পরিচয়ের ক্ষেত্রে প্রবেশ করার জন্তে আগ্রহ হওয়া স্বাভাবিক । কিন্তু আজকাল আমার মনে একটা বৈরাগ্য প্রবল হয়ে উঠচে । আমার মনে হয় অপরিচিত থাকার গর্ব আর্টিস্টের মানসিক আভিজাত্যের লক্ষণ । অজন্তা গুহার আর্টিস্টরা কেবল যে তুর্গম নিরালোক গুহার মধ্যে আপন বহুসাধনার স্বষ্টিকে সঞ্চিত করেছে তা নয়, নিজেদের নামটা মুছে ফেলে গেছে— নিজের অন্তরাত্মার কাছ থেকে ছাড়া আর কারো কাছে তারা পুরস্কার দাবী করতে হাত বাড়ায় নি। আমার তো ঈর্ষা হয় মনে। বলতে গেলে २ ० ¢