পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীলিমার নিবিড়তা নেই এর জলে, ঢেউগুলো কি আমারি বুকের রক্তদোলনের মতো হাফধরা, শ্রান্ত এর একঘেয়ে শব্দ, আর ঐ সারবাধা ফেনার পদবন্ধ, নিজাব পয়ারের চোদ্দ অক্ষর বাধা লাইনের মতো তটের উপর গড়িয়ে পড়ছে পুনঃ পুনঃ– ঐ বারবার অনুচ্চ ভাষায় ফিরে ফিরে আসাতে জোর দেয় না— জোরকে নিঃশেষ করে দেয়। বাতাসটা অত্যন্ত ঘুম-পাড়ানে। তন্দ্রাবিষ্ট দিনের বৈচিত্র্যহীন পুনরাবৃত্তি ঐ সাদা ফেনমালার নিরর্থক গতায়াতের মতো। ভেবেছিলুম এখানে এসে কিছু লিখব, কিছুতেই মন লাগল না লিখতে। এমন সময় তোমার অনুরোধ এল— কেদারায় পড়ে পড়েই লিখলুম। কলমটাকে ঠেলা দিয়ে জাগিয়ে তুলতে হোলো। মনে পড়ছে এইখানেই এই বাড়িতেই লিখেছিলুম— হে আদি জননী সিন্ধু বসুন্ধর সন্তান তোমার। সমুদ্রে তখন বোধ হয় যৌবনের উদামত ছিল— তার সঙ্গে ছন্দের পাল্লা দেবার স্পর্ধাতেই আমার সেই লেখা। এখনকার লেখায় সেদিনকার মতো উদ্বেল প্রাণের অচিন্তিত গতিমত্ততা থাকতেই পারে না, আছে হয়তো আত্মসমাহিত মনের ফলফলানোর নিগুঢ় আবেগ। যদি মনকে কর্মবিতৃষ্ণা থেকে টেনে তুলতে পারি তাহলে তোমাকে আর একটা চিঠি লিখব। ইতি ২৩|৪৩৯ তোমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ግ ግ