পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জয়ের আশা করছেন কার ? হিংস্ৰ শক্তির। এ শক্তি সর্বনাশ সাধনের পূর্বে কোনো কালেই তো শান্তিতে পৌছতে পারে না। এ যে শুধু মানুষের জীবিক ধ্বংস করছে তা নয় তার চিত্তশক্তিতে দিচ্ছে বিষ মিশিয়ে— যা কিছু তার শ্রেষ্ঠ সঞ্চয় বোমা ফেলে দিচ্ছে তাকে ধূলোয় গুড়িয়ে। আমাদের লজ্জার কারণ যথেষ্ট আছে কিন্তু আজ এই যে দুৰ্গতির নাগরদোলায় নিরস্তর ঘুরপাক দেখতে পাচ্ছি এই লজ্জা কার? হিংস্র শক্তির পাদপীঠ মানুষের দৌর্বল্যে, আর মাটি চোচীর করে তার চাষ লাগাবার ক্ষেত্র দুর্বলের অসহায়তায় । এই নিয়েই তার ব্যবসায়। অনেক দিন থেকে এই ব্যবসায়েই পৃথুল হয়েছে শক্তিমানের কলেবর— তার প্রতাপের পরিধি । বহুকাল থেকে বহুসংখ্যক মানুষকে সে অতলে নামিয়ে এসেছে, দাবিয়ে রেখেছে ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে আমরা তা জানি । তার প্রভাবের সীমানার মধ্যে পাছে কারো বললাভের সূচনা হয় এজন্য তার সুদূর প্রসারিত সতর্কত। নরহত্যার বিপুল আয়োজনে ও ব্যয়ভারে ক্লান্ত হয়ে ক্ষণকালের জন্তে যেই ভারলাঘবের চেষ্টা করে অমনি চমকে উঠে দেখে ভুল হয়েছে। চৈতন্য হয়েছে আপন মহিমার পরে বিশ্বাস রাখবার জন্যে তার দরকার অপরিমিত সংখ্যক খাড়া ও খর্পর। হিংস্ৰ শক্তির যে নিদারুণ জাগরূকতা আজ জল স্থল শূন্যে মৃত্যুর বিভীষিক বিস্তার করে রেখেছে এর অনুরূপ দৃষ্টান্ত ইতিহাসে আর দেখা যায় না । মানব-হননের অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করতে করতে পাশ্চাত্য সভ্যতার এই বিজয়-অভিযান কুচকাওয়াজ করে ৩১৭