পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যে নম্রতা এবং দায়িত্ববোধ আনে সেটা তার স্বভাবের পক্ষে পীড়াজনক। গত যুদ্ধে ভারতবর্ষ তার পরিচয় পেয়েছে। ঠিক যে সময়টাতে হিসাবনিকাশের অবকাশ এসেছিল ঠিক সেই সময়টাতেই প্রভূত পরিমাণে ঘনিয়ে এল বেত চাবুক জেল জরিমানা গোরাগুর্থ ও পুনিটিভ পুলিস। শক্তির পরে যে দেশের শাসনভার, স্বতই সে দেশের চেহারা কী রকম দাড়ায় তা আমাদের সামনে শোচনীয়ভাবে স্পষ্ট। নিঃসন্দেহ সেটা তাদেরও সুস্পষ্ট গোচর যাদের রাজছত্র সমস্ত দেশের দিকে দিকে ছায়া বিস্তার করেছে । সেখানে কোটি কোটি লোক অর্ধাসনে ক্লিষ্ট, অশিক্ষিত, আরোগ্যবিধানহারা, তাদের পানীয় জল কোথাও শুষ্ক কোথাও দূষিত, তাদের রাস্তাঘাটের অভাব চলাচলের প্রয়োজনের মাঝখানে, এ সমস্ত যদি উচ্চাসনবাসীর চোখে পড়েও না পড়ে হয় তাহলে বুঝব এইটেই শক্তির শাসনের লক্ষণ । দেশে কী নেই তা বললুম, কিন্তু যা আছে, সর্বত্রই, সে হচ্ছে সাম্প্রদায়িক ভেদ-বিচ্ছেদ । তুর্বলতা থেকেই এর উদ্ভব, দুর্বলতাকেই এ পোষণ করে রাখে। নিজের দায়িত্ব যাদের হাত থেকে নিঃসহায়ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাদেরই ঘটে এই দুর্বলতা। শক্তি-শাসনের এই বাহনটা দানাপানি খেতে রইল রাজার আস্তাবলে, আমাদের অন্নবস্ত্র অনেক কিছুর ক্ষয় হবে কিন্তু এর বিনাশ হবে না । মৈত্রীর দ্বারা শাসিত যাদের নিজের দেশ একবার তাদের সঙ্গে আমাদের দশার তুলনা ক’রে দেখা যেতে পারে। \ФЗ о