পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মার কল্যাণকামনায় । এখানকার শ্রাদ্ধেও স্থানীয় ব্রাহ্মণ পণ্ডিতকে অৰ্ঘ্য ও আহাৰ্য্য দান যে নেই তা নয়, কিন্তু এর সবচেয়ে ব্যয়সাধ্য অংশ সাজসজ্জা, সে সমস্তই চিতায় পুড়ে ছাই হয়। এই দেহকে নষ্ট করে ফেলতে এদের আন্তরিক অনুমোদন নেই, সেটা সেদিনকার অনুষ্ঠানের একটা ব্যাপারে বোঝা যায়। কালো গোরুর মূৰ্ত্তি, তার পেটের মধ্যে মৃতদেহ, রাস্তা দিয়ে এটাকে যখন বহন করে নিয়ে যায়, তখন শোভাযাত্রার ভিন্ন ভিন্ন দলের মধ্যে ঠেলাঠেলি পড়ে যায়। যেন ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা, যেন অনিচ্ছা । বাহকের তাড়া খায়, ঘুরপাক দেয়। এইখানেই আগম, অর্থাৎ যে-ধৰ্ম্ম বাইরে থেকে এসেছে তার সঙ্গে এদের নিজের হৃদয়বৃত্তির বিরোধ । আগমেরই হল জিত, দেহ হল ছাই । উবুদ বলে জায়গার রাজার ঘরে এই অনুষ্ঠান। তিনি যখন শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ ব’লে সুনীতির পরিচয় পেলেন সুনীতিকে জানালেন, শ্রাদ্ধক্রিয়া এমন সৰ্ব্বাঙ্গসম্পূর্ণভাবে এদেশে পুনৰ্ব্বার হবার সম্ভাবনা খুব বিরল অতএব এই অনুষ্ঠানে তিনি যদি যথারীতি শ্রাদ্ধের বেদমন্ত্র পাঠ করেন তবে রাজা তৃপ্ত হবেন । সুনীতি ব্রাহ্মণসজ্জায় ধূপধুনো জালিয়ে “মধুবাত। ঋতায়ন্তে” এবং কঠোপনিষদের শ্লোক প্রভৃতি উচ্চারণ ক’রে শুভকৰ্ম্ম সম্পন্ন করেন। বহুশত বৎসর পূর্বে একদিন বেদমন্ত্রগানের সঙ্গে এই দ্বীপে শ্রাদ্ধক্রিয়া আরম্ভ হয়েছিল, বহুশত বৎসর পরে এখানকার শ্রাদ্ধে সেই মন্ত্র হয়তো বা শেষবার ধ্বনিত হ’ল । মাঝখানে কত বিস্মৃতি, কত বিকৃতি। রাজা ○ レア