পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এবারকার যাত্রায় দেশের খবর বিশেষ কিছু পাই নি বলে মনে হচ্চে যেন জন্মান্তর গ্রহণ করেচি। এ জন্মের প্রত্যেক দিনের স্পেসিফিক গ্র্যাভিটি সাবেক জন্মের অন্তত দশদিনের তুল্য। মনে হচ্চে ওপারে কত কি বদল হয়েচে তার ঠিক নেই, চারাগাছগুলো এতদিনে বনস্পতি হয়ে উঠল বুঝি। তার কারণ, মুহূৰ্ত্তে মুহূৰ্ত্তে আমাদের কেবলি বদল হয়ে চলচে । নতুন জায়গা, নতুন মানুষ, নতুন ঘটনার চলমান প্রবাহ হুহু করে এগচ্চে। আমাদের এই চলার মাপে মন তোমাদেরও সময়ের বিচার করচে– তোমরা যে অপেক্ষাকৃত স্থির হয়ে আছ এ কথা মনেই হয় না। রেলগাড়ির আরোহী যেমন মনে করে তার গাড়ির বাইরে নদী গিরিবন উৰ্দ্ধশ্বাসে দৌড় দিয়েচে,— তেমনি এই দ্রুতবেগবান সময়ের কাধে চড়ে আমারো মনে হচ্চে তোমাদের ওখানেও সময়ের বেগ বুঝি এই পরিমাণেই,— বুঝি সেখানেও আজকের সঙ্গে কালকের সাদৃশ্য নেই, মুকুলের সঙ্গে ফলের বয়সের ভেদ বুঝি অনেক কমে গেছে। দূরে বসে যখন বোরোবুদর বালি প্রভৃতির কথা ভেবেচি তখন তাকে একটা বিস্তৃত কালের উপর মেলে দিয়ে দেখেচি, নইলে যেন অতখানি ধরে না । সে সমস্তই আয়ত্ত করা হয়ে গেল,— যা স্বপ্লবৎ অস্পষ্ট হয়ে ছিল তা প্রত্যক্ষ হল। দেখাশুনে চুকিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্চি। দূরের কল্পনায় যে সময়টা অফুটতার মধ্যে সুদীর্ঘ হয়ে ছিল নিকটের প্রত্যক্ষে সেই সময়টাই ঘন হয়ে উঠল,— অল্পকালের মধ্যেই অনেকটা কাল ঠেসে পাওয়া গেল। হিসেব করে দেখলে সেই পরিমাণে আমার ግ »