পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্থ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१८ চিঠিপত্র ইস্কুলে ইতিহাসে কোনোদিন আমি খ্যাতিলাভ করতে পারিনি । আমার ত এই মুঞ্চিল অতএব আমার জীবনচরিত তারিখ সম্বন্ধে একেবারে নিষ্কণ্টক হয়েই প্রকাশ হবে । উমাচরণ অনেক চেষ্টায় নিজের যোগ্য একটি পাত্রী জুটিয়েছিল— কিন্তু উপযুক্ত পণ জোটাতে পারেনি। পাত্রীর বয়স তিন বছর সুতরাং তিনশো টাকার কমে তাকে পাওয়া সম্ভব নয়— আরো দুই এক বছর বয়স কম হলে বোধ করি সেই পরিমাণে দামও কম হতে পারত । কিন্তু উমাচরণ অনেকদিন ব্রাহ্ম বাড়িতে কাজ করচে বলে বাল্যবিবাহের প্রতি তার আন্তরিক বিদ্বেষ । এইজন্যে সে অতি কঠোর পণ করেছে যে তিন বছরের কম বয়সের মেয়েকে সে কোনো মতেই বিয়ে করবে না— মরে গেলেও ন— তার এই সাধু সঙ্কল্পের দৃঢ়তা দেখে আমরা সকলেই আশ্চর্যা হয়ে গেঠি– কত তুমাস তিন মাসের মেয়ে তাদের মার কোলে শুয়ে চীৎকাব শব্দে কাদচে কিন্তু সে কান্নায় সে কিছুতেই কৰ্ণপাত করঢ়ে ন— এমনি ওর হৃদয় পাষাণের মত অটল-– কত সদ্যোজাত নপনীতিকোমল কুমারী দুষ্ট চক্ষু মুদ্রিত কোরে অহোরাত্রি ধ্যান করচে কিন্তু তাদের সেই তপস্যার প্রভাব ও উমাচরণের হৃদয়কে লেশমাত্র বিচলিত করতে পারচে না--- ওর এই চরিত্রবল দেখে সকলে স্তস্তিত হয়ে গেছে । তার এই সাধুতার পুরস্কারস্বরূপ তোর যদি আপন আপনির মধ্যে তিনশো টাকা কোনোমতে চাদ করে তুলতে পারিস তাহলে এই একটি তিন বৎসরের বয়স্ত মেয়ের আইবড়দশ ঘুচে যায়—