পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তরুণ বয়সে প্রাণে যে কবিত্ব জাগে, যে আকৃতি প্রকাশ করবার জন্য মূক মন ভাষা খুঁজে ব্যাকুল হয়, আমার প্রাণের সেই কবিত্ব ও আকৃতি যেন এই কবির লেখায় ভাষা পেয়ে হাফ ছেড়ে বঁাচল । আমার মনে হলো আমি যে কথা বলতে চাই অথচ পারি না, সেই কথাই তো এই কবি আমার জবানী ব’লে রেখেছেন। আমার মনের এই কথাটিও কবি পরে ‘ক্ষণিক কাব্যে বলে চুকেছেন— 兽 তোমাদের চোখে আঁখিজল ঝরে যবে আমি তাহদের গেঁথে দিই গীতরবে। লাজুক হৃদয় যে কথাটি নাহি কবে স্বরের ভিতরে লুকাইয়া কহি তাহারে । রবীন্দ্রনাথের কবিতা আমার প্রাণমন হরণ করল। আমি আর পরের বই পড়তে পারলাম না। নলিনী সেনকে তার বই ফিরিয়ে দিয়ে তখনই ছুটুলাম গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের বইয়ের দোকানে । একখানি টালী আকারের গ্রন্থাবলী কিনে নিয়ে হোষ্টেলে ফিরলাম এবং সেই দিন থেকে রবীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থ আমার জীবনের আনন্দ বন্ধু শিক্ষক গুরু সহচর হয়ে অাছে। এই সময়ে আমাদের সহপাঠী সুরেশচন্দ্র আইচ অামাদের সঙ্গে হিন্দু হোষ্টেলে বাস করছিলেন। আমি শুনলাম তিনি রবিবাবুর গান গাইতে পারেন। এর পরে তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হ’তে অধিক বিলম্ব হয়নি। কত সন্ধ্য। আমরা ইডেন গার্ডেনে গিয়ে স্বরেশের মধুর কণ্ঠের গান শুনে অতিবাহিত করেছি, তার স্মৃতি আজও মনকে হর্ষবিষাদে অভিভূত করে— সুরেশ আজ পরলোকে, কিন্তু সে আমাকে যে অমৃতের আস্বাদ দিয়ে গেছে তা আমার জীবনকে মাধুর্যে অভিষিক্ত ক'রে রেখেছে। এই সময়ে বা এর পরে এখন তা ঠিক মনে নেই, এবং কি উপলক্ষে তাও এখন স্মরণ নেই, কলকাতায় লোকমান্ত টিলক, মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত মদনমোহন মালবীয় প্রভৃতি দেশনেতারা সমবেত হয়েছিলেন। 〉な "