পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুমি নব নব রূপে এস প্রাণে এস গন্ধে বরণে এস গানে । রবীন্দ্রনাথের নিমন্ত্রণে একবার শিলাইদহে তার কাছে গিয়েছিলাম । তখন তিনি কাছারীর পরপারে চরের গায়ে বজরা বেঁধে বাস করছিলেন। দুখানি বজরা পাশাপাশি বাধা, একখানিতে কবি নিজে বাস করেন, আর অন্তখানিতে অজিতকুমার পীড়িত হয়ে স্বাস্থ্য সঞ্চয়ের জন্য বাস করছিলেন। আমি অজিতের বজরায় বাসা পেলাম। আমি কবিকে প্রণাম ক’রে স্নান করবার জন্য আমার বাসা বজরায় যাব বলে উঠলাম । কবির বজরা থেকে অজিতের বজরায় যাবার জন্য একটি তক্তা এক বোট থেকে অারেক বোট পর্যন্ত ফেলা ছিল। আমি যখন অপর বজরায় যাবার জন্য উঠলাম, কবি আমাকে বললেন– “চারু, দেখো সাবধানে যেয়ো, এখানে জোড়ার্সাকো নেই, এক সাকো দিয়েই পার হ’তে হবে।” সে সময়ে তিনি আমাকে যে যত্ব করেছেন তা আমার জীবনের মহাৰ্ঘ সম্বল হ’য়ে অাছে। নিজে না খেয়ে অামাকে খাওয়ানো, আমার স্বর্থস্বাচ্ছন্দ্য সম্বন্ধে সর্বদ। উৎসুক থাকা, অজিতকে ক্রমাগত বলা, দেখে। অজিত, তোমার বন্ধুর যেন কোন অসুবিধা না হয় । পরদিন রাত্রে আমাকে তার বোটে থাকতে অনুরোধ কবুলেন । এত বড় লোকের অত কাছে থাকৃতে আমার অত্যস্ত সঙ্কোচ বোধ হ’তে লাগল। আমি বললাম— আমি তে। অজিতের সঙ্গেই বেশ আছি, এখানে শুলে আড়ষ্ট হ’য়ে আমারও অসুবিধা হবে আর আপনারও বিশ্রামের ব্যাঘাত হবে। কিন্তু কবি কিছুতেই শুনলেন না, অজিতকে বললেন– “অজিত, তোমার বন্ধু তোমাকে ছেড়ে থাকৃতে চান না । অতএব তুমিও তোমার বাসা বদল ক’রে এই বোটে এসো।” সন্ধ্যার সময় খুব ঝড়জল আরম্ভ হলো। কবি বললেন– “অজিত অতিথির সম্বর্ধনা করো, গান ধরে ।” ૨ s જે > 8 || > 8