পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘুমভেঙে গেল গায়ে কিসের স্পর্শ লেগে । জেগে দেখি স্বয়ং কবি এসে অামার গায়ে তার নিজের গায়ের মলিদ চাদর ঢাকা দিয়ে দিচ্ছেন। আমি ধড়মড় ক’রে উঠে বসলাম। কবি আমাকে বললেন– “তুমি উঠে না, ঘুমোও, তোমার শীত করছে, তাই গায়ে ঢাকা দিয়ে দিচ্ছি।” অামি গুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলাম আমার সৌভাগ্যের কথা। কোন স্বকৃতির ফলে আমার মতন গুণহীন এত বড় কবি ঋষির স্নেহভাজন হ’তে পারল । so | ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছি। গভীর রাত্রি। হঠাৎ আমার ঘুম আবার ভেঙে গেল, মনে হলো যেন শাস্তিনিকেতনের নীচের তলার সামনের মাঠ থেকে কার মৃদু মধুর গানের স্বর ভেসে আসছে। আমি উঠে ছাদে অলিসের ধারে গিয়ে দেখলাম, কবিগুরু জ্যোৎস্নাপ্পাবিত খোলা জায়গায় পায়চারি করছেন আর গুনগুন ক’রে গান গাইছেন। আমি খালিপায়ে ধীরে ধীরে নীচে নেমে গেলাম। আমি গুরুদেবের কাছে গেলাম, কিন্তু তিনি আমাকে লক্ষ্য করলেন না, আপন মনে যেমন গান গেয়ে পায়চারি করছিলেন তেমনি পায়চারি করতে করতে গান গাইতে লাগলেন । গান গাইছিলেন খুব মৃদুস্বরে । আমি পিছনে পিছনে বেড়াতে বেড়াতে গানের কথা ধরবার চেষ্টা করতে লাগ লাম। তিনি গাইছিলেন— আজি জ্যোৎস্ন রাতে সবাই গেছে বনে বসন্তের এই মাতাল সমীরণে । যাব না গো যাব না যে, থাকৃব প’ড়ে ঘরের মাঝে, এই নিরালায় রব আপন কোণে । যাব না এই মাতাল সমীরণে ॥ অামার এ ঘর বহু যতন ক’রে •o ধুতে হবে মুছতে হবে মোরে ।

  • >3