পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যেতে লাগলেন। আমি বুঝলাম, ঐ যে দার্শনিকতা তা কেবল নিজের বিরক্ত মনকে সান্থন দেবার ও রুষ্ট মনকে শাস্ত করবার উপায় মাত্র, র্তার ঐ উক্তি স্বগত, আমাকে উপলক্ষ ক’রে নিজেকে বলা। অতএব আমি চুপ ক’রে সঙ্গে সঙ্গে চলতে চলতে শুনতে লাগ লাম মাত্র । আমার অত্যন্ত দুঃখ হয় যে ঐ চমৎকার উক্তির একবর্ণও আমার এখন মনে নেই; যদি তা প্রকাশ করতে পারতাম তবে সেটি তার ‘ধর্ম’ নামক পুস্তকে যে দুঃখ-সম্বন্ধে প্রবন্ধ আছে তার চেয়েও উৎকৃষ্ট ব’লে গণ্য হতো। অামাদের বরাবর যাত্রার কাহিনী ‘মামস’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। পুনরুল্লেখ অনাবশ্বক। যা সেখানে নেই তাই আমি বলছি। কবি অনেকক্ষণ কথা কয়ে ক্লাস্ত হ’য়ে স্তব্ধ হলেন । অামি ওয়েটিং রুম থেকে একখানা চেয়ার প্লাটফর্মের মধ্যখানে পেতে দিয়ে তাকে বসতে অনুরোধ করলাম। তখনো আমাদের ট্রেন আসতে দেরী আছে । অল্পক্ষণ পরে গয়া থেকে একখানা ট্রেন এলো। গেয়ে ষ্টেসনের প্লাটফর্মের উপর ঐ অসাধারণ চেহারার ও পোশাকের লোককে স্তব্ধ হ’য়ে বসে থাকৃতে দেখে ট্রেনের সকল গাড়ীর জানাল থেকে মুখ ঝু”কে পড়ল। ট্রেন চ’লে গেল। কয়েক জন গেয়ে লোক সেই ষ্টেসনে নেমেছিল । তারা বাইরে বেরিয়ে যাবার পথে সৌম্যমৃতি কবিকে সমাসীন দেখে তার থেকে দূরে অথচ তার সামনে থমকে দাড়িয়ে গেল। তাদের একজন দেখে দেখে গম্ভীরভাবে বললে— কোই রৈস (সন্ত্রাস্তব্যক্তি ) হৈঁ। দ্বিতীয় ব্যক্তি বললে— নেই, কোই রাজা হোইহে । তৃতীয় ব্যক্তি দুজনেরই অনুমান না-পছন্দ ক’রে মাথা মেড়ে বললে— নেহি, কোই সাধু হৈঁ জরুর। আমার মনে হলো ঐ তিনজমেরই অকুমান সত্য— তখন কবির মুখে আভিজাত্যের গাম্ভীর্য, রাজসিক তেজ, অণর সাত্ত্বিক ভাবের স্নিগ্ধতা মিলে এক অনির্বচনীয় সৌন্দৰ স্বষ্টি করেছিল। কবির মনে তখন যে সাত্ত্বিক ভাবের কি ঢেউ চলছিল তার সম্বন্ধে তার ‘গীতালি’ পুস্তকের শেষের २ > N