পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসতে আরম্ভ করে, আর রাত নটা দশটা পর্যন্ত আসতে থাকে। যার যখন অবসর ও ইচ্ছ। সে তখন আসে, কিন্তু কবির যে বিশ্রাম করার । অবসর পাওয়া দরকার, তার যে স্নানাহার আবশ্বক, এ সম্বন্ধে কারুরই হু’শ থাকে না। আমারও থাকৃত না সে অপরাধ স্বীকার ক’রে রাখি, অামাদের মনে হতো যে আমাদের যখন অবসর অাছে তখন র্তারও আছে । এক একদিন দেখেছি, লোকের পরে লোক আসছে, কবি ঠায় ব’সে আছেন, নড়া নেই চড়া নেই বসার ভঙ্গী পরিবর্তন করা নেই, তৃত্য এসে দূরে সসঙ্কোচে দাড়িয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছে যে আহার অপেক্ষা করছে, কবি তার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে নীরবে তিরস্কার করেছেন আর সে বেচার মুখ কাচুমাচু ক’রে পলায়ন করেছে। আমি অনেক সময় আগন্তুকদের কৌশলে বিদায় ক’রে দিয়ে কবিকে উদ্ধার করেছি। একদিন সন্ধ্যাবেলা আমরা গেছি, লোকের পরে লোক আসছেন, কেউ নূতন গান শিখে নিচ্ছেন, কেউ তাকে দিয়ে কিছু পড়িয়ে শুনছেন, কেউ নানা বাজে কথা পেড়ে বকর বকর করছেন। আর কবি অপরিসীম ধৈর্ষের সঙ্গে তাদের সকলের মন রক্ষা করছেন। রাত্রি আটটা বেজে গেল, আমরা উঠি উঠি করছি, এমন সময় এক ভদ্রলোক এলেন। তিনি এসেই জিজ্ঞাসা করলেন—“আচ্ছা আপনার ফ্রডের স্বপ্নতত্ত্ব সম্বন্ধে মত কি ? আমার তো মনে হয়”—চলল তার অনর্গল বক্তৃত । কবি তাকে বললেন—“দেখ, তোমার সঙ্গে বুঝি চারুর পরিচয় নেই, ও সম্পাদক মানুষ, ওর সঙ্গে আলাপ ক’রে রাখলে তোমার ফ্রডের কিছু হিল্লে লাগতে পারে।” সে ভদ্রলোক কবির ব্যঙ্গ বুঝতে পারলেন না। তিনি কেবল এক “ও” বলে আবার বকতে লাগলেন। তার বকুনি আর থামে না দেখে আমি উঠবার উপক্রম করলাম, তখন প্রায় রাত্রি দশটা ৷ আমাকে চলে যেতে উদ্যত দেখে কবি আমাকে বললেন, “চারু, তুমি চলে ঘেও না, তোমার সঙ্গে আমার দরকার অাছে, তুমি আর একটু বোসে ।” ૨૨ (t X 8 || > 6t