পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৃথিবীতে জরাটা হচ্ছে পিছনের দিক। ওর সামনের দিকটা যৌবন। এই জন্যে জগতে চারি দিকে যৌবনটাকেই দেখচি, জরাটা চলে চলে যাচ্চে । তাকে এই দেখচি, তার পরক্ষণেই দেখচি নে। যেই শীতে সমস্ত ঝরে পড়ল অমনি দেখলুম শীত নেই ; বসন্ত এসে সমস্ত পূর্ণ করে বসেচে। তার থেকেই বুঝতে পারি আমাদের জরা নবতর যৌবনের বাহন। পুরাতন আপনাকেই পুনঃ পুনঃ করে পেতে চায়। এই জন্যে সে নিজেকে পুনঃ পুনঃ হারায়— হারিয়ে পাওয়ার মধ্য দিয়ে সে যদি না চলে তাহলে পুরাতন আর নুতন হয় না— আমাদের নূতনটাকে উপলব্ধি করতে হবে বলেই আমরা মরি। ফাষ্ট্ৰীতে গীতিনাট্যাংশটুকু হচ্ছে প্রকৃতির মধ্যে নানা ঋতুর তোরণদ্বার দিয়ে একই পুরাতনের নবীন হওয়ার লীলা । আর তারই সঙ্গে যে নাট্যটুকু আছে তার মধ্যে মানুষের যৌবন জরার অনুসরণ করতে গিয়ে কেমন করে মৃত্যুগুহার ভিতর দিয়ে নবজীবনে উত্তীর্ণ হয় সে বর্ণনা আছে। বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে যে লীলা শীত বসস্তে, মানব প্রকৃতিতে সেই লীলা জরাযৌবনে, জন্ম-মৃত্যুতে । এই কথাটাকেই গীতে এবং নাটো ফাল্গুনীতে প্রকাশ হয়েছে । মনে হয় রবীন্দ্রনাথের এই ব্যাখ্যা সংকলিত পত্র পাওয়ার পরেই সুরেন্দ্রনাথ ‘ফাল্গুনী’ সম্বন্ধে তার লেখাটি রবীন্দ্রনাথকে পাঠান। চারুচন্দ্রের চিঠিতে উদ্ধৃত করে দেওয়া সুরেন্দ্রনাথকে লেখা রবীন্দ্রনাথের মূল পত্ৰখানিও ৬ই ফাল্গুন ১৩২২ তারিখে লেখা উদ্ধৃতাংশের আগে এই পত্রসূচনা ছিল : শিলাইদহ নদীয়া ফাল্গুনীর সম্বন্ধে যে প্রবন্ধটি লিখেচেন সেটি আমার তো ভালো লেগেচে । আমি ফাল্গুনীর রচয়িতা বলেই যে এমনটি ঘটল তা বোধ হয় 8