পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যে কাব্য আজ আমাদের গোচর হলো, একে বাংলা-সাহিত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখচি, কিন্তু বস্তুত এ তো বিচ্ছিন্ন নয়,--- যে একটি বৃহৎ ভূমিকার উপর এই কাবোর বিশেষ স্থান আছে সেটি না জানতে পারলে এর রস উপলব্ধি হয়তো সম্পূর্ণ হবে না।” কথাটা অনেকদিন পর্য্যস্ত আমার মনে লেগে ছিল । কোনো কাবোর পরিচয় তার নিজের মধ্যে সম্পূর্ণ হতে পারে না ; যখনি তা’র বিচার করি, তখনি স্বদেশী বিদেশী যে-কোনো সাহিত্য আমাদের জানা আছে নিজের অগোচরেও ত’র সঙ্গে আমরা যাচাই ক’রে থাকি । কলাসৃষ্টি বা সাহিত্যসৃষ্টিতে রুচি নিয়ে যখন তর্ক ওঠে, তখন তার অস্ত থাকে না। সংসারে এক একজন মানুষ থাকে যে সহজ কবি ; তেমনি সহজ এই কবি এবং রসিক উভয়ে একই জাতের মানুষ, তফাতের মধ্যে এই যে, একজনের কাছে সুরের প্রাণ এবং গলা, আর একজনের আছে সুরে প্রাণ ও কান। এই শ্রুতিবোধের সহজ শক্তি যথেষ্ট পরিমাণে না থাকলেও যে-মানুষ বহুশ্রুত সে মূলসৌন্দর্যের একটা আদর্শ বাইরে থেকে সংগ্রহ ক’রে অনেক পরিমাণে আত্মসাৎ করতে পারে। এর জন্যে চাই, সাহিত্যে যা-কিছু শ্রেষ্ঠ তা’র সঙ্গে নিম্নতম পরিচয় থাকা। এই পরিচয় বিশুদ্ধ সম্ভোগের, এ তত্ত্ববিশ্লেষণের বা শবব্যবচ্ছেদের মতো অঙ্গবিভাগের চর্চা নয়। এই সম্ভোগকে খাটি করতে হ'লে যা-কিছু আকস্মিক, যা-কিছু সাময়িক উত্তেজনামূলক, যা-কিছু ব্যক্তিগত সঙ্কীর্ণ প্রবৃত্তি বা সামাজিক অভ্যাসললিত, তার থেকে মনকে বিবিজ্ঞ করে নিতে হয়। এ কাজ সহজ নয়, কেননা যা আমাদের কাছের জিনিষ, যা উপস্থিতমতো ঘাটে-বাটে দশের কোলে-কাধে আদর পেয়ে ফেরে, তা অচিরস্থায়ী ও অকিঞ্চিৎকর হলেও তা’র প্রতি অভ্যস্ত স্নেহবশত তা’কে আমরা বেশি দাম দিয়ে ঠকি । এই রকম (*S)&