পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পড়ার হাটের রাঙতা-লাগানো সস্তা সামগ্রীর মোহ থেকে মনকে বাঁচাবার উপায় দূরপ্রসারিত সাহিতাকে মনের সঞ্চরণক্ষেত্র করা। যে-সমস্ত রসসৃষ্টি ক্ষণকালের প্রশ্রয়ের গওঁ পেরিয়ে নিত্যকালের বৃহৎ পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যে দৃঢ় হয়ে দাঁড়িয়েচে, তাদের সঙ্গে সৰ্ব্বদা চেনাশোনা থাকলে সাহিত্যবিচার করবার অধিকার জন্মে ও আনন্দ ভোগ করবার শক্তি খাটি হয়ে ওঠে। সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদগুলি সঙ্কলনের প্রয়োজন এই কারণেই। সাহিত্য বিজ্ঞানের মতো নয়। তার ঝুঁটা-সাচ্চ বিচার, যুক্তির দ্বারা সম্ভব হ’লে ভাবনা থাকত না; রুচি ছাড়া আর কোনো কষ্টিপাথর বা মানদণ্ড তার নেই। অথচ রুচি-সম্বন্ধে অতি অযোগ্য লোকেরও আত্মাভিমান আছে। এই রকম অভাজনের অসঙ্কোচ উপদ্রব সাহিত্যকে সহ্য করতেই হয়; চতুরাননের কাছে নালিশ করেও কোনো ফল নেই। বিধি যেখানে আছে বিধাতার কাছে তা’র দরবার খাটে। এ তো বিধি নয়, এ যে উপলব্ধি। এ ক্ষেত্রে করেও কোনো ফল নেই। নিৰ্ব্বিবেক অত্যাচার ঘটলে তার কোনো চরম প্রতিকার আছে বলে জানিনে,— একটি মাত্র উপায় হচ্চে, সাহিত্য অনুশীলনের সাহায্যেই সাহিত্যরুচির বিস্তার সাধন করা। এ জিনিষটা সাধুতার মতোই,— স্বাভাবিক সাধুতা যদি দুৰ্ব্বল হয়, তবে সাধুসঙ্গ হচ্চে পথ। কিন্তু মূলধন অল্প থাকা সত্ত্বেও এ প্রণালী যে সকলের পক্ষে খাট্‌বে তা নয়; তবু যারা উপযুক্ত ভোজের আয়োজন ক’রে সাহিত্যরুচির উদ্বোধন করতে প্রবৃত্ত, তারা অসাধ্যসাধনে অক্ষম হ’লেও অস্তুত কবিদের কৃতজ্ঞতাভাজন। ኺ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'বঙ্গবীণা’র পাশাপাশি চারুচন্দ্র ‘মালিকা' (ঢাকা ১৯৩৪) নামে আরেকখানি কাব্যচয়নিকাও সংকলন করেছিলেন, তাতে রবীন্দ্রনাথের ৩৪টি কবিতা গৃহীত হয়। পত্র ১০০ । প্রেমোৎপল ও অমিয়ার বিবাহ ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৮ 冷 CS