পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লক্ষ্মীছাড়া গৃহছাড়া হয়ে কাটিয়েচি . এসব দেশে আমি যে গভীর ভালোবাসা পাই সেটা জন্মগত আত্মীয়তার জিনিস নয়, সে যে মর্মগত আত্মীয়তার জিনিল— তার চেয়ে বহুমূল্য আর কিছু নেই, এই ভালবাসার অজস্র দাক্ষিণ্য দেখে আমি ৰিস্মিত হই ।” ১৯৩০ খৃস্টাব্দে শেষবার ইয়োরোপ ভ্রমণকালে রবীন্দ্রনাথ তার জন্মদিনে প্যারিস থেকে নির্মলকুমারী মহলানবিশকে লিখছেন— "আজ আমার জন্মদিন । এখানে যে রবীন্দ্রনাথ আছে সে এখানকার উপকরণ নিয়ে নিজেকে একটা সম্পূর্ণতা দিয়েছে । তার সঙ্গে পচিশে বৈশাখের রবি ঠাকুরের মিল হবে না । দেশে ফিরে গেলে তবে আমি তাকে ফিরে পাব, সেখানকার সব কিছুর সঙ্গে । তার মূল্য কিন্তু ঢের কম, ভেজাল দেওয়া জিনিষের মতো । সেখানকার নানা হালকা এবং বাজে পদার্থে তাঁকে খাটো করেচে— বহু অকিঞ্চিৎকরতার সঙ্গে জড়িত হয়ে সে আত্মমর্যাদা ভুলে যায়। তাই সেখানে মন পালাই পালাই করে । অথচ সেখানে আকাশে বাতাসে রূপে রসে এমন কিছু আছে যা আমার মানস-খাদ্যের প্রাণপদার্থ। আসল কথা আমার বিশ্বপ্রকৃতি আছে সমুদ্রের ওপারে, মানব-প্রকৃতি আছে এপারে। এখানকার মানুষ আমাকে গভীর করে সম্পূর্ণ করে উদ্বোধিত করে, তাহ নিজেকে শ্রদ্ধা করতে পারি। তাই আমার জন্মভূমি পূর্বে ও পশ্চিমে দ্বিখণ্ডিত ।" হেমন্তবালা দেবীকে ১৭ আগস্ট ১৯৩৪ খৃস্টাব্দে একটি চিঠিতে এইরকম জানিয়েছিলেন— "দেশের অধিকাংশ লোকে আমাকে হৃদয়ের মধ্যে গ্রহণ করতে পারে না, এবং আমার আঘাতে অপমানে যথেষ্ট ব্যথিত হয় না, এই সত্যকে আমি স্বীকার করে নিয়েছি— বুঝেছি দেশের মধ্যে তার স্বাভাবিক কারণ রয়েচে । • • • . \O evo