পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অভিমান অল্পেই আঘাত পায়— অথচ এরূপ আঘাতের মধ্যে লজ্জার কারণ আছে। নিজেকে সেই গ্লানিজনক অবস্থা হইতে রক্ষা করিবার জন্য আমি কথিত বা লিখিত গালিমন্দের কথা হইতে দূরে থাকিতে চেষ্টা করি। বিদ্বেষে কোনো সুখ নাই কোন শ্লাঘা নাই, এইজন্য বিদ্বেষ্টার প্রতিও যাহাতে বিদ্বেষ না আসে আমি তাহার জন্য বিশেষ যত্ন করিয়া থাকি। জীবনপ্রদীপের তেল ত খুব বেশি নয় সবই যদি রোষে দ্বেষে হূহুঃ শব্দে জ্বালাইয়া ফেলি তবে ভালবাসার কাজে এবং ভগবানের আরতির বেলায় কি করিব? বিশেষতঃ আমার ছুটি লইবার সময় হইয়া আসিয়াছে— এখন বাজে কলহে কাজের ক্ষতি করিলে বিপক্ষের কিছুই হয় না নিজেরই বিপক্ষতা করা হয়।

 অধ্যাপনা এবং “চোখের বালি”র উপসংহারেই আমার দিন কাটিয়া যাইতেছে। ইতিমধ্যে আপনার বইখানি আর একবার পড়িয়া ফেলিয়াছি এবং পুনর্ব্বার নূতন আনন্দ লাভ করিয়াছি। জ্যৈষ্ঠ মাসের বঙ্গদর্শনে যদি সমালোচনা না যায় তবে আপনি আমাকে হয়ো দিবেন।

 আপনি সর্ব্বপ্রকার উদ্বেগ হইতে উদ্ধার পান এই আমার প্রার্থনা। ইতি ২০শে বৈশাখ ১৩০৯

আপনার
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর