পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভাবের উত্তেজনাতেই খুলনা হইতে বরিশালে ষ্টীমার চালাইতে প্রবৃত্ত হইয়া ইংরেজ-কোম্পানির সহিত দারুণ প্রতিযোগিতায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন— তৎকালে ধরিশালে স্বদেশীর দল তাঁহার সাহায্যের জন্য যেরূপ প্রচণ্ড উৎসাহে যাত্রী সংগ্রহ ও যাত্রী ভাঙানর কাজে প্রবৃত্ত হইয়াছিল এরূপ Fuller-এর আমলে ঘটিলে কি বিপদ হইত অনুমান করিবেন।

 কনগ্রেস গবর্মেণ্টের নিকট আবেদনের দিকেই শিক্ষিত-সম্প্রদায়ের চেষ্টাকে প্রবৃত্ত করাইল।

 সাধনা পত্রে ও তাহার পরে অন্যত্র এইরূপ আবেদন নীতি ত্যাগ করিয়া আত্মশক্তি চালনার দিকে মন দিতে উপদেশ দেওয়া হইয়াছে এবং বলেন্দ্রনাথ এবং আমাদের পরিবারের অনেকে যোগ দিয়া স্বদেশী ভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা করা হইয়াছে।

 এই স্বদেশী ভাণ্ডারের ভগ্নাবশেষের উপরে Indian Stores এর অভ্যুদয়।

 ইহার অনতিকাল পরেই Provincial Conference এ যাহাতে বাংলা ভাষায় দেশের আপামর সাধারণের নিকট স্বদেশের অভাব আলোচনা করা যায়— যাহাতে ইংরেজি ভাষায় কেবল রাজার নিকট আবেদনেই আমাদের কর্তব্য নিঃশেষিত না হয় রাজসাহী কনফারেন্সে সত্যেন্দ্রনাথের নায়কতায় প্রথম সেই চেষ্টা করা হইয়াছিল, পর বৎসর ঢাকাতেও সেই চেষ্টা করা যায়।

 স্বদেশী movement এর সঙ্গে এই সকল চেষ্টার ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। ধর্ম্ম সম্বন্ধে যেমন আদি ব্রাহ্মসমাজ প্রাচীন শাস্ত্রের দিকে মনকে টানিয়াছিলেন Politics সম্বন্ধেও সেইরূপ কিছুদিন হইতে দেশের লোককে দেশের দিকেই টানিবার চেষ্টা চলিতেছিল। তৎকালে শিক্ষিত লোকেরা যেমন সহজে শাস্ত্রের দিকে স্বদেশী ধর্ম ও স্ব সমাজের দিকে ফিরিতে চাহেন নাই এখনকার দিনেও সেইরূপ

৩২