পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সাহায্য করিব— কিন্তু এখানে নূতন ছাত্র ও রোগীদের জন্য ইমারত ঘর তৈরি করিতে হইতেছে— তাহাতে বিস্তর খরচ পড়িবে— অতএব এখন কিছুকাল আমার সম্বল কিছুই থাকিবেনা— তাহার উপরে বহু ব্যয়ে বই ছাপাই এমন শক্তি আমার নাই। ত্রিপুরা হইতে অর্থসাহায্য সম্প্রতি কোনোমতেই প্রত্যাশা করা যায় না— নাটোরকে টাকার কথা বলিতে আমি কুণ্ঠিত। যদি গগনরা এই ভার লইতেন ত বড় সুখের বিষয় হইত। আমার মত অক্ষমের কেবলমাত্র সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নাই।

 আমার কাব্য সম্বন্ধে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় মহাশয় যে সকল অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন তাহা লইয়া বাদ প্রতিবাদ করিবার কোনোই প্রয়োজন নাই। আমরা বৃথা সকল জিনিষকে বাড়াইয়া দেখিয়া নিজের মনের মধ্যে অশান্তি ও বিরোধ সৃষ্টি করি। জগতে আমার রচনা খুব একটা গুরুতর ব্যাপার নহে তাহার সমালোচনাও তথৈবচ। তা ছাড়া, সাহিত্য সম্বন্ধে যাঁহার যেরূপ মত থাকে থাক্ না সেই তুচ্ছ বিষয় লইয়া কলহের সৃষ্টি করিতে হইবে না কি? আমার লেখা দ্বিজেন্দ্রবাবুর ভাল লাগেনা কিন্তু তাঁহার লেখা আমার ভাল লাগে, অতএব আমিই ত জিতিয়াছি— আমি তাঁহাকে আঘাত করিতে চাই না।

 অরুণ কিঞ্চিৎ অসুস্থভাবেই এখানে আসিয়াছে— সৌভাগ্যক্রমে জ্বর দেখা দেয় নাই। আজ সকাল হইতে বৃষ্টির সহিত ঝোড়ো হাওয়া দিতেছে— আশা করি এই বাদলায় অরুণের অনিষ্ট করিবেনা। কলিকাতাতেও নিশ্চয় এইরূপ দুর্যোগ চলিতেছে।

 ভূপেন্দ্রবাবু অত্যন্ত পীড়িত অবস্থায় বর্দ্ধমানে পড়িয়া আছেন— কাল তাঁহাকে দেখিতে গিয়াছিলাম। তাঁহার অবস্থা একান্ত উদ্বেগজনক।

 আমি অগ্রহায়ণে বিদ্যালয় [...] দিন পনেরে। কাজকর্ম্ম চালাইয়া

৩৭