পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দেখিলাম, নিজে না করিলে কোনমতেই সুবিধা হয় না। কারণ, বাংলার ভাষা ও ছন্দের সঙ্গীত ইংরেজিতে যখন আনা সম্ভব নয় তখন কেবল ভাবমাত্রটিকে অত্যন্ত সরল ইংরেজিতে তর্জ্জমা করিলে তবে তাহার ভিতরকার সৌন্দর্য্যটুকু ফুটিয়া উঠে। এই কাজটি আমার দ্বারা সহজেই হয়— কারণ সরল ইংরেজি ছাড়া আমার দ্বারা আর কিছু হওয়া সম্ভব নহে, তার পরে নিজের ভাবটুকু অন্তত নিজে যথাসম্ভব বুঝি। সেদিকে ভুল হওয়ার আশঙ্কা নাই। ভাষাটাকে অত্যন্ত না জানার একটু সুবিধা আছে। অল্প জমি একজোড়া গোরু জুতিয়াও খুব ভাল রকম চাষ দেওয়া যায়—তেমনি নিজের সঙ্কীর্ণ অধিকারের মধ্যে যেটুকু পারা যায় সেইটুকুর মধ্যেই নিজেকে আবদ্ধ রাখিয়া বারবার করিয়া সেটাকে মাজাঘষা সহজ। যাহা ক্ষমতায় কুলায় না তাহা ছাড়িয়া দিই, যেখানে বাধা পাই সেখানে ঘুরিয়া যাই— নিজের জিনিষ বলিয়াই সেটা করা সম্ভব। এমন করিয়াও যে চলনসই কিছু খাড়া করিতে পারিব তাহা মনেও করি নাই— যাহা হউক চলিয়া ত গেছে। এখন লজ্জা ভাঙিয়াছে সাহস বাড়িয়াছে। তাই অনুবাদ জমিয়া উঠিতেছে। আজ এইমাত্র শারদোৎসব শেষ করিলাম— বোধ হইতেছে এটাও চলিবে। যাহাই হউক ভাল করিয়া পারি আর না পারি নিজের কবিতা নিজে তর্জ্জমা করা ছাড়া উপায় নাই।

 আপনার সেই Selection ছাপা কতদূর হইল জানিবার জন্য উৎসুক আছি।

 অরুণকে এবং বৌমাকে আমার আশীর্ব্বাদ জানাইবেন। ইতি

ভবদীয়
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এইমাত্র সতী পাইলাম। যদি বাহুল্য অংশ ছাটিয়া ছুঁটিয়া মাজাঘষা

৪৪