পাতা:চিঠিপত্র (দশম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঘোচায় অভাব, আমি দিই, সেটা আমার স্বভাব।” এই উদারনীতি-উজ্জ্বলিত কল্যাণীর গৃহের সঙ্গে তাহার তুলনা হয় না, সে যেন কাচ, এ যেন কাঞ্চন। অবস্থা হইতে অবস্থান্তরে পড়িয়া সেই “ক্ষীরো” একরূপই আছে পরিচারিকা অবস্থায় তাহার ইচ্ছা প্রতিরুদ্ধ হইত, রাণী হইয়া তাহা কার্য্যক্ষেত্রে প্রলয়ংকরী হইয়াছিল। প্রভুত্বের স্বপ্নভঙ্গে সে নিজের পরিচয়টা ভাল করিয়া বুঝিতে পারিল এবং রাণী কল্যাণীর পদধূলি লইয়া নিজের অবনতি স্বীকার করিল, তাঁহার চরিত্র যেরূপ কৌশলে রক্ষিত হইয়াছে, এরূপ নিপুণ প্রণালী আর কোথায়ও দেখিয়াছি বলিয়া মনে হয় না। এই সর্ব্বাঙ্গসুন্দর খণ্ডকাব্যখানি পাঠ করিয়া কেবল ‘কি সুন্দর’! ‘কি সুন্দর’! বলিয়া হর্ষের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করিতে হইয়াছে।

 আমার একটি দুঃখের কথা আছে, আপনাকে দেখি নাই; শিলাইদহ যাইবার পথ অসুবিধাজনক না হইলে ৫।৭ দিনের জন্য আপনার ওখানে যাইবার ইচ্ছা হয়, আমার শরীর কাতর কিন্তু গাড়ীতে এখন বোধ হয় কতকটা দূর যাইতে পারিব, আপনার সুবিধানুসারে ও শরীর কতক পরিমাণে ভাল থাকিলে আপনার চিরানুরক্ত ভক্ত তাহার কামনা পূর্ণ করিতে পারিবে। শিলাইদহ, ষ্টেশন হইতে কতদুর?

অনুগত
শ্রীদীনেশচন্দ্র সেন