পাতা:চিঠিপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জানেন এই আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সম্বন্ধে আমার নিজের মধ্যে কোনো ঘোষণা কোনো দিন প্রকাশ পায় নি কারণ অামি তা বিশ্বাস করি না। এ জীবনে যে মূলধনটুকু নিয়ে জনতার হাটে প্রতিপত্তির কারবার করে এসেছি সে আমার কবিত্বশক্তি মাত্র । সেই দান যে আমি ভাগ্যের হাত থেকে গ্রহণ করে জন্ম নিয়েছিলেম একথা অস্বীকার করলে কিংবা কম করে বললে যে কুত্রিম বিনয় প্রকাশ করা হবে সেটা মিথ্যে অহংকারের চেয়েও ঘূণার যোগ্য । কিন্তু আমার এই কবিত্বের পরিমাণ বা গুণ যতই হোক এবং যাই হোক তা যথার্থ ভাবে জানবার কোনো সুযোগ যুরোপীয়ের ঘটে নি, তারা সেটা হয়তো আন্দাজে ধরে নিয়ে থাকবেন । এই আন্দোজের মধ্যে সহজেই অতিকৃতি এসে পড়ে সুতরাং যে আদশে তারা সেদিন আমাকে বিচার করেছিলেন সে ছিল তাদের নিজেরই অন্তরের সৃষ্টি তাতে তারা আনন্দ পেয়েছিলেন এবং আমাকে উপলক্ষ্য করে সেই আনন্দ সম্ভোগ করেছিলেন এজন্ত নিজেকে আমি ধন্ত মনে করি । আপনারা শুনলে হয়তো বিস্মিত হবেন এমন কি বিরক্ত হোতেও পারেন যে সেদিন সমস্ত পাশ্চাত্য দেশ আমাকে যে সমাদরের আসন দিয়েছিলেন তা তৎপূর্বে আমার দেশে আমার জন্ত তেমন প্রশস্তভাবে কখনো পেতে দেওয়া হয় নি। আমার বয়েস হয়ে গিয়েছে । খ্যাতি সম্বন্ধে আমার কোনো মোহ নেই, কিন্তু সম্পূর্ণ প্রীতির সঙ্গে সেদিন য়ুরোপ আমাকে যে সম্মান দান করেছিলেন তা আমি সবিনয় কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেছি এবং আমার অস্তরের মধ্যে সেই সৌভাগ্যের স্মৃতি ●