পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তখনো তেমনি— অর্থাৎ বেঁচে থাকার সুখ দুঃখ লাভ ক্ষতি প্রিয় অপ্রিয় এই মতোই আবর্তিত হয়ে চলবে । বৰ্ত্তমান জীবনকে যদি তার সমস্ত দায় নিয়ে ছাড়তে অনিচ্ছা হয় তবে ঠিক তখনকার জীবনেও তেমনিই হবে। এই জীবনেই কতবার মরেচি ভেবে দেখ । শিশুকালে আমার দাইকে অসম্ভব ভালোবাসতুম। তখনকার যে জীবন সেটা তাকেই কেন্দ্র করে ছিল । এক ঘণ্টার মতো তার তিরোধানের কথা সেদিন বিনা অশ্রুপাতে প্রসন্নমনে চিন্তা করতে পারতুম না । কিন্তু সে আজ ছায়া হয়ে গেল, কোনো ব্যথার দাগ নেই। তার পরে অন্ত কেন্দ্র নিয়ে যে জীবন সৃষ্ট হয়েচে সেটার দাম সমস্ত সুখদুঃখ নিয়ে অনেক বেশি। কিন্তু অবশেষে এ সমস্ত গিয়েও জীবনাস্তরে আর একটা সত্তা যখন জমে উঠবে তখন তাকে নিয়েই এত ব্যাপৃত হব যে গতস্য শোচনা বলে পদার্থই থাকবে না । অতএব মৃত্যু সম্বন্ধে নির্ভয় নিশ্চিন্ত হয়ে থাকাই তো ভালো। কোনো কোনো বিশেষ আকারের মৃত্যু আমার অনভিপ্রেত। বাঘে আমাকে খাদ্যবস্তুরূপে গিলে গিলে খাবে এটা অামি পছন্দ করি নে। কিন্তু সেই না-পছন্দ জিনিষটা বাঘে খাওয়া,– মৃত্যু নয়। বস্তুত বাঘে খাওয়া উপসর্গটার মধ্যে মৃত্যুটাই সব চেয়ে বাঞ্ছনীয়। বছর পঞ্চাশ ধরে যদি বাঘেই খেত তাহলে প্রাণরক্ষার স্বস্ত্যয়ন করতে গ্রহাচাৰ্য্যকে দক্ষিণা নিশ্চয়ই দিতুম না । মীরা যদি তোমাকে পিসিমা বলে ফেলে তাহলে সে সম্বন্ধটা মানাবে না। অনেক দিন ধরে তুমি বহুতর দলিলপত্রে যে সম্বন্ধ পাকা করে ফেলেচ, আমার তরফেও যার কবুলতি পেয়েচ, মীরা > S 8