পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রকৃতিতে পুরুষ মুখ্য, মেয়ে গৌণ, এবং মেয়েদের প্রকৃতিতে তার উপ্টো, এইটেই সাধারণত হয়ে থাকে, না হলে সেটাতে সংসারের ওজন ঠিক থাকে না । মেয়েরা অজস্র স্নেহ প্রেম ভক্তি দিয়ে নিজেকে এবং নিজের সংসারকে পূর্ণ করে তুলবে এইটেই চাই, এইটে হোলো তার রসের দিক,— এর সঙ্গে তার শক্তির দিক আছে যে দিকে তার নিষ্ঠা, ধৈর্য্য, ত্যাগের দৃঢ়তা, যে-শক্তির দ্বারা সে আপন আশ্রয়কেও আশ্রয় দেয়, পালন করে, প্রতিষ্ঠিত রাখে, তার বিকারকে শোধন করে তার বেদনার আরোগ্য অানে, অর্থাৎ যাতে-করে সে নির্ভরের দ্বারা দুৰ্ব্বল করে না, চরিতার্থ করে। কিন্তু ঐ রসের ধৰ্ম্ম যদি পুরুষও আশ্রয় করে তাহলে নিজের উপরে পুরুষকে নারীভাব আরোপ করতে হয়, অর্থাৎ সেটা হয় তার স্বভাবের বিরুদ্ধ । পুরুষ নিজেরই স্বভাবকে দ্রঢ়িষ্ঠ করে তবেই সার্থকতা লাভ করে, উজানে গেলে দুৰ্ব্বল হয়ে জীবনের উদেশ্বকে ব্যর্থতায় নিয়ে যায়। বুদ্ধি দিয়ে বিজ্ঞান দিয়ে বীর্য্য দিয়ে অপ্রতিহত অধ্যবসায় দিয়ে আমাদের সৃষ্টিকে কেবলি উৎকর্ষের দিকে নিয়ে চলব, সমস্ত বাধাকে পরাস্ত করব, প্রতিকূলতাকে ভাগ্যের অমোঘ লিখন বলে স্বীকার করে নেব না, এই হলেই সত্যকার পুরুষের দ্বারা সংসারে স্বাস্থ্য শান্তি সম্পদ আত্মসম্মান বজায় থাকতে পারে, এই হলেই মেয়েরাও নিরাপদ নির্ভর ও গৌরব লাভ করে। নইলে পুরুষরাও যেখানে রসের তরঙ্গে হাবুডুবু খাওয়াকেই জীবনের চরম লক্ষ্য বলে গ্রহণ করে, — সেই পৌরুষবজ্জিত দেশ সকল দিক থেকে পরাভবের বন্যায় যায় ডুবে । সেই জন্যে তোমার চিঠিতে তোমার হৃদয়ের মাধুর্য্যে > උණ්