পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখেছি জাপানকে, তারা ধৰ্ম্মমোহ থেকে মুক্ত হয়ে তবেই রাষ্ট্ৰীয় মুক্তি পাবার অধিকারী হয়েছে— হতভাগ্য ভারতবর্ষ এই মোহের কুহেলিকায় আবৃত— সে অন্ধ, সে পঙ্গু, সে আপনার দেবতাকে নিয়ে খেলা করচে সেই অপরাধে দেবতা তাকে সকল প্রকার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত করচেন অপমানের আর অস্ত নেই। তবু কৰ্ত্তব্যবিমুখ মূঢ় ভক্তি নিয়ে ঠাকুরঘরের মধ্যে নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকাকেই যারা পরমার্থ বলে জানে— তারা যে কত বড়ো অকৃতাৰ্থ তা বোঝবার শক্তিও তাদের নেই কেননা তারা ভাবমদে অপ্রকৃতিস্থ । কঠিন দুঃখের দিন এসেছে কিন্তু নেশায় নিজেকে ভুলিয়ে রাখতে চাই নে— কণ্টকিত পথের উপর দিয়ে শেষ পর্য্যস্ত নিজের লক্ষ্য অভিমুখে চলতে হবে । এক এক সময়ে ক্লাস্তি আসে, তখন পালাতে ইচ্ছা করে যেমন করে একদিন ইস্কুল পালাতুম। তখন আবার ধিক্কার আসে মনে, লজ্জা পাই । ইস্কুলমাস্টার তো নেই, নিজেকেই নিজে বেঞ্চির উপর দাড় করিয়ে দিই । অতএব ফাকি দেব কাকে, পশ্চাতে নিজের চৌকিদার নিজেই আছি । মনকে এক একবার বোঝাতে চাই, কৰ্ম্ম আমার জন্তে নয়, আমার জন্তে কাব্য । কিন্তু মন যে বোকা নয়, তাকে কথায় ভোলানো শক্ত। অতএব শেষ পৰ্য্যন্তই আছে খাটুনি । চিঠি বেশি লিখব এমন আশঙ্কা কোরো না— তুমিও তো নিস্কৃতি নিয়েছ । ইতি ৬ শ্রাবণ ১৩৩৯ দাদা » « ማ