পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অক্সফোর্ডেও যে বক্তৃতা দিয়েছিলুম তা বিস্তর পীড়াপীড়ির পরে। না দিলে আমার বলবার কথা অনুক্ত থাকত। কমলা লেকচারেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে লিখতে হোলো, অথচ দায়ে পড়ে যদি না লিখাতুম তাহলে সেটা অামার পক্ষে অকৰ্ত্তব্য হোত । বারে বারে আমার এই রকমই ঘটে থাকে। অামার অবস্থাটা ব্যস্ত, অামার স্বভাবটা কুঁড়ে — কেবলি দ্বন্দ্ব বাধে কিন্তু অবস্থারই জিৎ হয় । ছেলেবেলা থেকে আমি স্বভাবতই কুণো অথচ আমি যত দেশেবিদেশে মানুষের ভিড়ের মধ্যে ঘুরপাক খেয়ে বেড়িয়েছি এমন দ্বিতীয় ব্যক্তি আজ সমস্ত পৃথিবীতে আছে কিনা সন্দেহ । বিশ্রামের জন্যে ছুটির জন্যে আমার অকৰ্ম্মণ্য মন নিরতিশয় উৎসুক অথচ আমাকে যত প্রভূত পরিমাণে কাজ করতে হয়েচে, এমন ঘোরতর কেজো লোককেও না । সাধ্যমতে স্বদেশকে নানা প্রকারে সেবা থেকে আমি বঞ্চিত করি নি অথচ আনন্দের সঙ্গে উৎসাহের সঙ্গে অব্যাঘাতে নিৰ্ম্মমভাবে দেশের লোক আমাকে যত গাল দিয়েচে বাংলাদেশে দ্বিতীয় ব্যক্তি এমন কেউ নেই । এই এক অদ্ভূত দ্বন্দ্ব আমার জীবনে । তোমার ইংরেজি লেখা দেখলুম। প্রকাশ করবার শক্তি তোমার স্বভাবতই আছে । বাল্যকাল থেকে যদি যথেষ্ট পরিমাণে ইংরেজির চর্চা করতে তাহলে ভালো লিখতে পারতে । তাতে লাভ কি হোত । যে লেখা শ্বেতদ্বীপের শ্বেতভুজ সরস্বতী অৰ্ঘ্যরূপে গ্রহণ করতে পারেন সে লেখা বাঙালীর কলমের মুখে প্রসন্ন হয়ে বিকাশ পায় না । বই পড়ার রাস্তায় ইংরেজি ভাষার সঙ্গে আমাদের যোগসাধনটাই প্রশস্ত । সে কম লাভ নয় । ) మ (t