পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতিমানুষ হন তাহলে তাকে নিয়ে কেবল হৃদয়াবেগের খেলা খেললেই চলে, আমাদের কৰ্ম্মে তার কোনো প্রয়োজন নেই— বুদ্ধি চাই নে, শক্তি চাই নে, চরিত্র চাই নে, কেবল নিরস্তর ভাবে ডুবুডুবু হয়ে থাকলেই হোলো। অর্থাৎ তাকে দিয়ে হৃদয়ের সখ মেটাবার ব্যাপার। যেহেতু খেলার পুতুল সত্যকার মানুষ নয় এই জন্তে তাকে নিয়ে বালিকা আপন হৃদয়বৃত্তিকে দৌড় করায়— আর কোনো দায়িত্ব নেই। কিন্তু সস্তানের মার দায় আছে, শুধু কেবল হৃদয় নয়— তাকে বুদ্ধি খাটাতে হয়, শক্তি খাটাতে হয়, সন্তানের সেবা পরিপূর্ণমাত্রায় সত্য করে না তুললে চলে না । মানুষের মধ্যে যে দেবতার আবির্ভাব তাকে পুতুল সাজিয়ে ফাকির নৈবেদ্য দিয়ে ভোলাবে কে ? সেখানে তার সঙ্গে ব্যবহারে পূর্ণ মানুষ হতে হবে। খেলার দেবতা মানুষের দেবতাকে বঞ্চিত করে— মাত্রার দেবতা মানুষেরই গায়ের অলঙ্কার হরণ করে নিয়ে। ঠাকুরকে এই রকম অলঙ্কার দিতে হৃদয়ের তৃপ্তি হয় মানি, কিন্তু ঠাকুরকে কেবলমাত্র হৃদয়তৃপ্তির উপলক্ষ্য করলে তাকে ছোট করা হয়, তার সঙ্গে সম্বন্ধকে অত্যন্ত অসম্পূর্ণ করা হয় । তুমি মনে করে ঠাকুরের ভাণ্ডারে এই যে প্রভূত ধন অলঙ্কার নিস্ফলভাবে সঞ্চিত হচ্চে এ কোনো এক সময়ে অত্যন্ত প্রয়োজনে কাজে লাগবে না কখনো না, এ পর্য্যন্ত তার কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না । বিষয়ী লোকের ধনসঞ্চয়ের যে তুর্নিবার লালসা সেই লালসার তৃপ্তিই দেবতার নামে আমরা করি— নিজেদের বৈষয়িকতাকেই আমরা মঠে মন্দিরে পুঞ্জীভূত করে তুলি— এর আর সীমা থাকে না— তার প্রধান কারণ o