পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি মাটির মানুষ, তার মানে এ নয় যে ভালোমানুষ অামি । তার মানে এই যে ধরণীর মাটির পাত্র থেকেই আমি অমৃত পান করি— জলস্থল আকাশে আমার মনের খেলাঘর । মেয়েরা শ্বশুরঘরের উপর বিরক্ত হলেই বাপের ঘরে চলে যায়। তেমনিতরো মনের ভাব নিয়েই মানুষ দৌড় মারতে চায় বৈকুণ্ঠের দিকে— এই মৰ্ত্ত পৃথিবীর উপর আমার যদি তেমন বিতৃষ্ণ হোতে আমিও তাহলে বৈকুণ্ঠের প্রতি বিশ্বাসকে আকড়ে ধর তুম | দরকার হয়নি বলে কল্পনাও করি নে। আনন্দরূপমমৃতং যদ্বিভাতি— আমার কাছে এই মর্ত্যের রূপই আনন্দরূপ অমৃতরূপ— একে অবজ্ঞা করি এত বড়ো ধৃষ্টতা আমার নেই। এর চেয়ে আরো কিছু উচু আছে বলে যে মনে করে, তার নিজের চোখে দোষ আছে ! আমার এই উত্তরের দিকের জানলা দিয়ে নীল আকাশ ঢেলে দিচ্চে তার আলোকসুধা, পূর্বদিকের খোলা দরজার সামনে উদার পৃথিবী তার স্যামল আমন্ত্রণ প্রসারিত করে ধরেছে — আমি এই সোনার ধারা সবুজ ধারার মোহানায় বসে দুই চক্ষুকে ছাড়া দিয়েচি, বেলা যাচ্চে কেটে— আর কি চাই আমার— বুঝতেই পারি নে যতসব হযবরল মন্ত্র। এতবড়ো সুস্পষ্টতার মধ্যেও উপলব্ধি যদি না হয় তবে কিছুতেই হবে না । ইতি ৪ অক্টোবর ১৯৩৩ ভজনপূজনহীন দাদা २ > २