পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একটা তালজাতীয় গাছ আপন স্বাতন্ত্র্য উচ্ছিত করেচে মেঘলোকে । আমাদের বাগানে বিলম্বে ফলবার অামগাছে তখন বোল ধরেচে, দখিন বাতাসের বেগে দূরের থেকে তার গন্ধ মৃছ হয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করচে । হঠাৎ কখনো ব্যর্থ সন্ধানে কোনো একটা ভ্রমর ভন ভন করতে করতে এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করে অার এক দরজা দিয়ে বেরিয়ে চলে যায় । নদীর ধার দিয়ে একটা বাকাচোরা পথ গ্রামগুলির সামনে দিয়ে কোনো একটা বড়ো রাস্তার সঙ্গে মিলন লক্ষ্য করে চলেচে । এই গ্রামের রাস্তার দুই ধারে আম জাম কাঠাল আমার আমলে আমার হুকুমে লাগানো হয়েচে । রাস্তার বাকের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাকী ভঙ্গী উপর থেকে দেখতে পেতুম | বাংলা দেশের এই সুকোমল শুশ্রুষার পরিবেষ্টনের মধ্যে থেকে আমি তখন সাধনার জন্তে গল্প লিখচি প্রবন্ধ লিখচি, লিখচি ক্ষণিক চিত্রা আরো কত কি | তারি ফঁাকে ফঁাকে বাংলা পল্লিগ্রামের যে স্পর্শ আছে তা আমার পাঠকেরা ঠিক বুঝতে পারবে না। আমার সেই সেদিনকার কল্পনা তোমাদের গৌরীপুরের উপরে আরোপ করচি। ঠিক মিলবে না বোধ করি। ওখানকার পল্লী বোধ করি ঐশ্বৰ্য্যের সোনার শুঙ্খলে বন্দিনী । তা হোক মাঝে মাঝে হাফ ছাড়বার অবকাশ আছে হয়তো । বুঝতেই পারিনে অর্থহীন সংস্কার নিজে সৃষ্টি করে কঠিন উৎপীড়নের জাল বিস্তার করাকে মানুষ কেন যে ধৰ্ম্মবুদ্ধির প্রেরণা বলে কল্পনা করে । নিজেকে নানা বিচিত্র বন্ধনে আষ্টেপৃষ্ঠে বদ্ধ করতে যারা অভ্যস্ত, তারা কোনো কালে কোনো বন্ধন 义88