পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাধে চড়ে মেরুদণ্ডের উপর তাণ্ডব নৃত্য করতে থাকে। বাঙালী অভিমানী জাত— বড়ো ছোটো সকলেরই সকল প্রকার অনু রোধই সৰ্ব্বাগগণ্য । তাই মরণের উপরেই অন্তিম ভার, তিনিই আছেন আমার বিশ্রামের আয়োজন সাজিয়ে । মাদ্রাজের পালা শেষ করে এলেম । ফেরবার পথে ওয়ালটেয়রে ভিজিয়নগ্রমের মহারাণীর অতিথি ছিলুম। কিন্তু সে তো আতিথ্য নয়, ষোড়শোপচারে পূজা । এরোপ্লেনে করে মাদ্রাজ বাঙ্গালোর থেকে প্রতিদিন ঝুড়ি ঝুড়ি ফুল আসত— আমার চলবার পথ ঢাকা পড়ত গোলাপের ভূপে । দেবতার নৈবেদ্য অসঙ্কোচে গ্রহণ করবার মতো স্পৰ্দ্ধা অামার নেই— কিন্তু মহারাণীর অকৃত্রিম ও সুমধুর ভক্তিই আমার লজ্জা দূর করে দিত। মনে জানতুম এর মূল্য আমার নয়, সে ঐ ভক্তিরই। প্রস্রবণ যেমন পাথরের মধ্যে দিয়ে আপনার পথ আপনিই খনন করে চলে, নারীহৃদয়ের পূজাউৎসও তেমনি আপন গতিবেগেই আপন তটের সৃষ্টি করে— তার মধ্যে প্রবাহিত সেই ধারারই জয় । মহারাণীর একটি মেয়ে আছে, সুন্দর দেখতে, তার নাম উৰ্ম্মিল । স্টেশনে আমাকে মালা দিয়ে অভ্যর্থনা করতে এসেছিল। প্রথমেই আমাকে পরিচয় দিলে আমি আপনার নাৎনী । ওরা দাদামশায়কে বলে নানা । বস্তুত আমার দাদামশায়ের পদটা “নানা” বিশেষণ পাবারই উপযুক্ত হয়েছে। অনেকদিন পরে স্বস্থানে ফিরে এসে ভালো লাগচে । ইতিমধ্যে শরৎকে ঠেলে দিয়ে শীত চড়ে বসেচে সিংহাসনে । শিউলিশাখায় বীজ ধরে গেছে— চামেলি ফুটে একটা ফুটচে কিন্তু মালতী চলে ২৭১