পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিচিত্ৰ— কোনোটা তোমার চোখে পড়ে কোনোটা অার কারো। তুমি খুজিচ তোমার মনের একটি বিশেষ ভাবকে তৃপ্তি দিতে পারে এমন কোনো একটি রূপ— তান্তগুলোও রূপের মূল্যে মূল্যবান হলেও হয় তো তুমি গ্রহণ করতে চাইবে না। কিন্তু কাব্যের যারা যথার্থ রসজ্ঞ, তারা নিজের ভাবকে কাব্যে খোজে না— তারা যে কোনো ভাব রূপবান হয়ে উঠেচে তাতেই আনন্দ পায় । তোমার চিঠি পড়তে পড়তে আমার মনে হয়েচে একটা বিশেষ খাদে তোমার চিত্তধারা প্রবাহিত— সেইটেই তোমার সাধনা । আমরা কবিরা কেবল সাধকদের জন্তে লিখি নে,বিশেষ রসের রসিকদের জন্তেও না । আমরা লিখি রূপদ্রষ্টার জন্তে— তিনি বিচার করেন সৃষ্টির দিক থেকে— যাচাই করে দেখেন রূপের আবির্ভাব হোলো কিনা। অামার রূপকার বিধাতা সেই জন্তো অামাকে নানা রসের নানা ভাবের নানা উপলব্ধির মধ্যে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান— নিজের মনকে নানানখানা করে নানা চেহারাই গড়তে হয় । যে-ই একটা কিছু চেহারা জাগে ওস্তাদজি তখন আমাকে চেলা বলে মানেন । আমি যে সব কৰ্ম্ম হাতে নিয়েচি তার মধ্যেও সেই চেহারা গড়ে তোলবার ব্যবসায় । উপদেশ দেওয়া উপকার করা গৌণ, রচনা করাই মুখ্য। সেই জন্যেই আমি সবাইকে বারবার করে বলি, দোহাই তোমাদের, হঠাৎ আমাকে গুরু বলে ভুল কোরো না । আমি কৰ্ম্মীও বটে— কিন্তু যার অন্তর দৃষ্টি আছে সে বুঝতে পারে আমি কারুকশ্বের কৰ্ম্মী। আমি কবিতা লিখি, গান লিখি, গল্প লিখি, নাটমঞ্চে অভিনয় করি, নাচি নাচাই, ছবি আঁকি, হাসি, হাসাই, একান্তে ૨ >