পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৃত্যু হয়েছিল তাতে কিছু আসে যায় না । আধ্যাত্মিক গৌরব আত্মায়, আধিদৈহিকে নয়। খৃষ্ট সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছিলেন বিজ্ঞান এ কথা অস্বীকার করলেই যদি ভক্তের ভক্তি ক্ষুন্ন হয় তবে সে ভক্তি ছেলেমানুষী । আধুনিক কালে রামকৃষ্ণ পরমহংসকে ভক্তের ভগবানের অবতার বলে ধরে নিয়েছেন, তাই বলে তার জন্ম ও মৃত্যুঘটনা এবং তার প্রতিদিনের দেহযাত্রায় অলৌকিকত্ব আরোপ করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। বিশ্বের সৃষ্টিকৰ্ত্তা স্বয়ং ভক্তের আবদার রক্ষা করতে বা বিপদ থেকে রক্ষা করতে হঠাৎ বারো ঘণ্টার দিনকে আঠারো ঘণ্টা করেছেন বা করতে পারেন বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে এ কথা হেসে উড়িয়ে দিতে পারি কিন্তু তাতে ঈশ্বরকে হেসে উড়িয়ে দেওয়া হয় না। ছেলে ভুলিয়ে যে সব ভক্তের ভক্তি উদ্রেক করতে হয় তাদের ভক্তির কোনো মূল্য নেই। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানকে মানলে ভক্তিকে খৰ্ব্ব করা হয় না তার কারণ এই যে সেখানে বিজ্ঞানেই ঈশ্বরের প্রকাশ– সর্বশক্তিমান আপনার প্রকাশের আপনি প্রতিবাদ করতে পারেন না, যেমন আত্মহত্যা করা তার সাধ্যের অতীত। বিজ্ঞান ও ইতিহাসের যাথার্থ্য মানা র্তারই যাথার্থ্য মানার অঙ্গ— বিজ্ঞানবিরোধিতা নাস্তিকতা, কারণ স্বয়ং ঈশ্বরের সৃষ্টি বৈজ্ঞানিক— বিজ্ঞানেই তার লীলা, অবৈজ্ঞানিক ছেলেমানুষীতে নয় । ইতি ৮ পৌষ ১৩৪৪ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর \93t